যুগে যুগে ঈমানের আহ্বান
Published : Saturday, 9 April, 2022 at 12:00 AM
মুফতি আতাউর রহমান ||
আল্লাহ যুগে যুগে নবী-রাসুল (আ.)-এর মাধ্যমে মানবজাতির কাছে ঈমানের আহ্বান পৌঁছে দিয়েছেন। মানবজাতির দায়িত্ব হলো সেই আহ্বানে সাড়া দেওয়া এবং মহান আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা। কিন্তু কখনো কখনো মানুষ অহংকার ও পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুকরণের কারণে ঈমানের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই বলা হলে তারা অহংকার করত এবং বলত, আমরা কি এক উন্মাদ কবির কথায় আমাদের ইলাহদের বর্জন করব? বরং সে সত্য নিয়ে এসেছে এবং সে রাসুলদের সত্য বলে স্বীকার করেছে।’ (সুরা সাফফাত, আয়াত : ৩৫-৩৭)
ইমাম শিনকিতি (রহ.) আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘আমি অপরাধীদের সঙ্গে এমন আচরণ করেছি। কেননা পার্থিব জীবনে যখন তাদের বলা হতো, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই; তখন তারা অহংকার করত। তারা অহংকার করত তা গ্রহণ করা থেকে এবং তারা আল্লাহর রাসুলদের আনুগত্যে সন্তুষ্ট হতো না। ’ (আদওয়াউল বয়ান : ৬/৩১২)
রাসুলুল্লাহ (সা.) অত্যন্ত চমৎকারভাবে ঈমানের আহ্বান গ্রহণকারীদের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন। আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা আমাকে যে হিদায়াত ও জ্ঞান দিয়ে পাঠিয়েছেন তার দৃষ্টান্ত হলো জমিনের ওপর পতিত প্রবল বর্ষণের মতো। কোনো কোনো ভূমি থাকে উর্বর, যা সে পানি শুষে নিয়ে প্রচুর পরিমাণে ঘাসপাতা এবং সবুজ তরুলতা উৎপাদন করে। আর কোনো কোনো ভূমি থাকে কঠিন, যা পানি আটকে রাখে। পরে আল্লাহ তাআলা তা দিয়ে মানুষের উপকার করেন; তারা নিজেরা পান করে ও (পশুপালকে) পান করায় এবং তা দ্বারা চাষাবাদ করে। আবার কোনো কোনো জমি রয়েছে যা একেবারে মসৃণ ও সমতল; তা না পানি আটকে রাখে, আর না কোনো ঘাসপাতা উৎপাদন করে। এই হলো সে ব্যক্তির দৃষ্টান্ত যে দ্বিনের জ্ঞান অর্জন করে এবং আল্লাহ তাআলা আমাকে যা দিয়ে প্রেরণ করেছেন তাতে সে উপকৃত হয়। ফলে সে নিজে শিক্ষা করে এবং অপরকে শেখায়। আর সে ব্যক্তিরও দৃষ্টান্ত যে সেদিকে মাথা তুলে দেখে না এবং আল্লাহর যে হিদায়াত নিয়ে আমি প্রেরিত হয়েছি, তা গ্রহণও করে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৯)