ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
লিবিয়ায় মানব পাচারকারীদের সাথে বাংলাদেশিরাও জড়িত
Published : Wednesday, 13 April, 2022 at 12:00 AM, Update: 13.04.2022 12:58:23 AM
লিবিয়ায় মানব পাচারকারীদের সাথে বাংলাদেশিরাও জড়িততানভীর দিপু: লিবিয়া থেকে ইতালিতে অবৈধভাবে মানব পাচারের সাথে বাংলাদেশি দালালরাও জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন পাচারের সময় নির্যাতনের শিকার কুমিল্লার দেবিদ্বারের ইয়াকুব হাসান। সমুদ্র পথে অবৈধভাবে ইতালি যাবার সময় বাংলাদেশিসহ যারাই মাফিয়াদের হাতে অপহৃত হন তারা যেন পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশিদেরও আলাদা দল আছে। যারা মাফিয়াদের কথায় পরিচালিত হয়। এছাড়া মাফিয়াদের কাছ থেকে ছাড়িয়ে আনতে যে টাকা পয়সা লেনদেনে যে দালালরা কাজ করে তারাও বাঙালি। ইয়াকুবকে ফিরিয়ে আনতে তাদের কয়েকজনকে টাকা দিয়ে চেষ্টা করে ইয়াকুবের পরিবার। ইয়াকুব হাসানের মা শাহিনুর বেগমও একই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, দালালদের দু’এক জন এখন দেশে থাকতে পারে। তারা আমার কাছ থেকে ইয়াকুবের জন্য মুক্তিপণের টাকা নিয়ে আর দেখা করেনি। বরং ফোন বন্ধ করে দিয়েছে।
গত রমজান মাসে দালালের খপ্পরে পরে ইতালি যাবার জন্য চেষ্টা করে ইয়াকুবসহ অন্তত তিন শ’ বাংলাদেশি। কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র পথে নৌকায় করে ইতালি যাবার পথে মাফিয়াদের হাতে আটক হয় তারা। অজানা জায়গায় বন্দি শিবিরে কাটে দিন রাত। অত্যাচার ও নির্যাতন সহ্য করে থাকতে হয় মাসের পর মাস। ছেলের খোঁজে দালালের আশ্রয় নেয় ইয়াকুবের বাবা। এসময় প্রচন্ড হতাশায় তিনি অসুস্থ হয়ে গেলে ছেলেকে খুঁজতে জানুয়ারি মাসে লিবিয়ায় যান ইয়াকুবের মা। সেখান থেকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহযোগিতায় খুঁজে পান ইয়াকুবকে। কিন্তু এর আগেই মুক্তিপন কিংবা ইয়াকুবের ফিরে আসার খরচ বাবদ প্রায় ২০ লাখ টাকা দেয়া হয় কয়েকজন দালালকে। তাদের সবাই কোন ফল দিতে পারে নি বরং টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। শাহিনুর বেগমের দাবি, দালালদের কেউ কেউ এখন দেশেও আছে। তাদের মধ্যে সিলেটের জাহাঙ্গীর নামে এক জনকে সর্বশেষ সাড়ে চার লাখ টাকা দিয়েছেন। ঘরের ভিটি, গোয়ালের গরু বেঁচে, ধার করে  এসব টাকা যোগাড় করা হয়েছে। ছেলেকে ফিরি পেয়েছি এখন এসব দালালের কাছ থেকে যদি টাকাগুলো উদ্ধার করা যেত তাহলে কোন রকমে খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারতাম।
এদিকে ইয়াকুবের খবর পেয়ে গতকাল সকালে তাদের দেবিদ্বার কালিকাপুরের বাড়িতে যান কুমিল্লার শ্রম ও জনশক্তি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক দেবব্রত ঘোষ। তিনি ইয়াকুব ও তার মা শাহিনুর বেগমের সাথে কথা বলে তাদের কাছ থেকে দালালদের তথ্য নেন এবং তাদেরকে আইনী সব ধরনের সহযোগিতার আশ^াস দেন। তিনি বলেন, কুমিল্লা জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও শ্রম-জনশক্তি অধিদপ্তরে তারা লিখিত অভিযোগ করতে পারেন। অথবা লিগ্যাল এইড সার্ভিসের সহযোগিতা নিতে পারেন। আমরা তাদের পাশে আছি।