রাজশাহীতে পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। এদের মধ্যে এক নারীও আছেন। সোমবার বিকাল থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা ব্যক্তিরা রাজশাহীর চারঘাটের হলিদাগাছী গ্রামের মামুনুর রহমানের স্ত্রী শরিফা আক্তার সাথী (২৭), নগরীর হাদির মোড় এলাকার মাসুম শেখ (৩৮), রামচন্দ্রপুর মিরেরচক এলাকার আশিক আলী (২৩), একই এলাকার মুনতাসির আলী সিয়াম (২৯) ও কেদুর মোড় এলাকার মো. পলাশ (২৭)। এ সময় তাদের কাছ থেকে পুলিশের ব্যবহৃত ওয়াকিটকি, পুলিশের ব্যবহৃত একজোড়া জুতা, পুলিশ লেখা ও পুলিশের মনোগ্রাম সংবলিত দুটি কার্ড হোল্ডারসহ টাকা উদ্ধার করা হয়।
নগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, রাজশাহী কোর্ট কলেজের এক ছাত্র ‘বাসা ভাড়া’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে বাসা ভাড়া নেওয়ার জন্য পোস্ট দেন। সেখানে ওই ছাত্র তার মোবাইল নম্বর দেন। ওই পোস্ট দেখে শরিফা আক্তার নামের এক নারী ছাত্রকে বাসা ভাড়া দেওয়ার জন্য ফোন করেন। এরপর ১৩ এপ্রিল ওই ছাত্র নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম পূর্বপাড়া এলাকায় ওই নারীর বাসায় যান। ওই নারী তাকে বাসাটি ঘুরিয়ে দেখান। একপর্যায়ে ওই নারী ছাত্রকে বাসা দেখানোর কথা বলে নিচতলার একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে কৌশলে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। এ সময় শরীফা ও তার কয়েকজন সহযোগী নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে থানায় নেওয়ার হুমকি দিয়ে ওই ছাত্রকে মারধর করেন। একপর্যায়ে ওই ছাত্রকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন তারা।
পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ওই ছাত্রকে আটকে রেখে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। পরে ওই ছাত্রের কাছে থাকা অর্থ ও বিকাশের মাধ্যমে মোট ১৪ হাজার ৯০০ টাকা মুক্তিপণ আদায় করা হয়। পরে ওই ছাত্র কাশিয়াডাঙ্গা থানায় মামলা করলে সোমবার বিকাল থেকে রাতভর অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।
নগর ডিবির উপকমিশনার আরেফিন জুয়েল বলেন, চক্রটি আগেও এ ধরনের অপহরণের নাটক সাজিয়ে পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজি করেছে। এটি তাদের চতুর্থ ঘটনা। তাদের বিরুদ্ধে অপহরণ, চাঁদাবাজি, পুলিশের ব্যবহৃত জিনিসপত্র ব্যবহারের অভিযোগে আলাদা মামলা হয়েছে। মসঙ্গলবার বিকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।