কুমিল্লায় পাসপোর্ট করতে আসা তিন গ্রাহককে চেয়ার দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) নুরুল হুদার বিরুদ্ধে সেবা নিতে এসে মারধরের শিকার তিনজনের একজন মোঃ সাকিব। তার বাড়ি জেলার হোমনা উপজেলায়। সোমবার সকালে এসেছেন পাসপোর্ট নেয়ার জন্য। এ সময় সাকিব পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন অফিসের নিচতলায়। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর সাকিব পাশে থাকা একটি চেয়ারে বসে পড়েন। তার সাথে আরো অন্তত তিন চারজন সেবাগ্রহীতা বসেন। এ সময় আচমকা পাসপোর্ট অফিসের ডিডি মোঃ নুরুল হুদা নিচে নেমে আসেন। এসেই প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে সেবাগ্রহীতাদের পেটাতে থাকেন। চেয়ার ভেঙ্গে গেলে ওই সেবা গ্রহীতাদের চড় থাপ্পড় দিতে থাকেন তিনি। । সোমবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে ঘটে এ ঘটনা। পরে এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে স্থানীয় অনলাইন পোর্টালের এক সাংবাদিকের ক্যামেরা কেড়ে নেয়া হয়। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় মোবাইল ফোনটি ফেরত দেওয়া হয়। মোঃ সাকিব বলেন, ‘আমি খুব ব্যাথা পেয়েছি। আমার সাথে থাকা আরো দুজন ভয়ে অফিস থেকে চলে গেছে। ’
এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করছিলেন কুমিল্লা প্রেস নামে একটি অনলাইন পোর্টালের সংবাদকর্মী মোঃ সাফি। পরে উপ-পরিচালক নুরুল হুদা ওই সংবাদকর্মীর মোবাইল ফোন নিয়ে যান। এদিকে পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা অন্তত দশজন সেবাগ্রহীতা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, হঠাৎ করে বড় স্যার বাইরে আইসা চেয়ারে বসা দুই তিনজনরে পিডানি দিছে। পরে থাপ্পড় দেয়। এ ঘটনার পরে আমরা অনেকে ভয় পেয়ে যাই। থাপ্পড় খেয়ে দুই তিনজন অফিস থেকে চলে যায়।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে পাসপোর্ট অফিসে যান কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সহিদুর ও পরিদর্শক (তদন্ত ) কমল কৃষ্ণ ধর।
মারধরের বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেছে কি না এবিষয়ে জানতে চাইলে ওসি সহিদুর জানান, আমি শুনেছি উপপরিচালকের সাথে সেবাগ্রহীতাদের কথা কাটাকাটি হয়েছে। আর বেশী কিছু জানি না।
পরে ঘটনার তিন ঘন্টা পর ওসি সহিদুর রহমান এবং থানার তদন্ত কর্মকর্তা কমল দে'র উপস্থিতিতে ছিনিয়ে নেয়া মোবাইলটি সাংবাদিককে ফেরত দেয়া হয়। ওই ঘটনার বিবরণ দিয়ে সংবাদকর্মী মোঃ সাফি বলেন, আমি আমার পাসপোর্টের বিষয়ে পাসপোর্ট অফিসে যাই। ওই সময় দেখি পাসপোর্ট অফিসের ডিডি আমার কিছুটা সামনে তিন চারজন সেবাগ্রহীতাকে চেয়ার দিয়ে পেটাচ্ছেন। পরে ভুক্তভোগীদের কাছে জানতে চাই কেন তাদেরকে পোটালো। ভুক্তভোগীরা জানান,তারা ভুল করে অফিসের কর্মকর্তাদের চেয়ারে বসেছিলেন। এ জন্য তাদেরকে পেটানো হয়। ঘটনার বিষয়ে পাসপোর্টের ডিডির কাছে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে আমার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মোঃ নুরুল হুদা জানান, তিনি কাউকে মারধর করেননি।
সাংবাদিকের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার বিসয়ে তিনি বলেন- ‘অনুমতি না নিয়ে ভিডিও ধারণ করায় মোবাইল ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে মোবাইল ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।’