ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধ
Published : Wednesday, 20 April, 2022 at 12:00 AM, Update: 20.04.2022 12:51:47 AM
ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধহাফেজ মাও: মুফতী মোহাম্মদ ইব্রাহীম ক্বাদেরী ||
গতকাল গেল ১৭ রামাদ্বান ১৪৪৩ হিজরী, ১৯ এপ্রিল রোজ মঙ্গলবার ঐতিহাসিক বদর দিবস। আজ থেকে ১৪৪১ বছর পূর্বে ২য় হিজরীর এই ১৭ই রামাদ্বানে ইসলাম বিরোধী কুফরী শক্তির বিশাল বাহিনীর বিরুদ্ধে নূর নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম ও সাহাবায়ে কিরাম (রা:) দের ক্ষুদ্র একটি দল ইসলামের পক্ষে, সত্যের পক্ষে, ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেন এবং মহাবিজয় লাভ করেন।
এই যুদ্ধে মহানবী (দ:) স্বয়ং নেতৃত্ব দেন। আর মহান আল্লাহ সরাসরি ফেরেশতা পাঠিয়ে মুসলমানদের সাহায্য করেন। এই যুদ্ধে সেনা প্রধান ছিলেন নূর নবীজি (দ:) স্বয়ং আর সাথে ছিলেন হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা:), উমর ইবনুল খাত্তাব (রা:), হামজা ইবনে আব্দুল মুত্তালিব (রা:), আলি ইবনে আবী তালিব রা:সহ ৩১৩ বীর সেনানিগণ। অপরদিকে মক্কার কাফের কুরাইশগণের নেতৃত্ব দেয় আবু জাহল, উতবা ইবনে রাবিয়া, উমাইয়া ইবনে খালফ সহ ১০০০ জন সশস্ত্র যোদ্ধা। সৈন্য সংখ্যার দিক দিয়ে মুসলমান ৩১৩ পদাতিক বাহিনী, কাফের ১০০০ পদাতিক বাহিনী, মুসলমানদের ঘোড়া-২টি, কাফেরদের ঘোড়া ১০০টি, মুসলমানদের উট ছিল ৭০টি, কাফেরদের ৭০০টি। কাফেরদের সবাই ছিল সমরাস্ত্র ও খাদ্য সামগ্রিতে ভরপুর আর মুলমানগণ ছিলেন নামে মাত্র অস্ত্রশস্ত্র ও প্রত্যেকেই রোজদার।
মক্কার কাফের কুরাইশদের অত্যাচারে নবীজি (দ:) সাহাবায়ে কিরামদের মদিনায় হিজরত করেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে ইসলামের প্রচার প্রসারে ব্যস্ত থাকেন। ইসলামের ব্যাপারে মক্কার চেয়ে মদিনাতে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায় এবং তা বিভিন্ন রাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ে। এতে মক্কার কাফেররা অসহ্য হয়ে মদিনা আক্রমণ করার পরিকল্পনা করেন এবং আক্রমণ পরিচালনা শুরু করেন। দয়াল নবীজি (দ:) এই সংবাদ পেয়ে আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেন এবং এক পর্যায়ে বিশাল যুদ্ধ রূপ নেয়।
এই যুদ্ধের আগের দিন দয়াল নবীজি (দ:) রাতে মহান আল্লাহর দরবারে দীর্ঘক্ষণ সেজদায় পড়ে কান্নাকাটির মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য কামনা করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তা কবুল করে সরাসরি ফেরেশতা দ্বারা মুসলমানদের সাহায্য করেন এবং বিশাল বিজয় দান করেন। মূলত: এই বিজয় পরবর্তীতে মক্কা বিজয়ের সূচনা হয়।
এই যুদ্ধে মুসলমানদের ১৪জন শহীদ হন। আর কাফেরদের ৭০জন নিহত ও ৭০জন বন্দি হন। ইসলামের চিরশত্রু আবু জাহল এই যুদ্ধেই নিহত হয়। (সংক্ষিপ্ত)
বদরের যুদ্ধ দ্বারা প্রমাণ হয় যে, মুসলমানগণ বিজয় অর্জন করে ঈমানের বলে। যুদ্ধাস্ত্র ও সৈন্য সংখ্যার হিসাবে নয়। বর্তমানেও যদি আমরা ঈমানী বলে বলিয়ান হয়ে সারাবিশ্বের মুসলমান ঐক্যবদ্ধ হতে পারি তাহলে সারা বিশ্ব মুসলমানদের আয়ত্বে এসে যাবে ইনশা আল্লাহ। আর সেদিন বেশি দূরে নয় যে বায়তুল মুক্বাদ্দাসে উড্ডিন হবে ইসলাম তথা ফিলিস্তিনি পতাকা আর পরাজিত হবে ইহুদি অপশক্তির।
বদরের চেতনা জেগে উঠুক সারা বিশ্বের প্রতিটি মুমিনের হৃদয়ে- এই কামনা।
লেখক: ইমাম ও খতিব, কান্দিরপাড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও কেন্দ্রীয় ঈদগাহ কুমিল্লা