জহির
শান্ত: কুমিল্লায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের শেষ দিকে এসে কেনাকাটা জমে উঠেছে
মার্কেটগুলোতে। ফুটপাত থেকে শুরু করে বিপনী বিতান- সবখানেই ক্রেতাদের ভিড়;
বেড়েছে বিক্রিও। ক্রেতার সমাগম ও বেচাবিক্রিতে খুশি ব্যবসায়ীরা। গড়ে
প্রতিদিন কুমিল্লা মহানগীর প্রায় প্রতিটি দোকানে ৫০ হাজার টাকার মালামাল
বিক্রি হচ্ছে। বেচা-কেনার এ ধারা অব্যাহত থাকবে ঈদরাত পর্যন্ত। কুমিল্লা
নগরীতে পোশাক, গহনা ও জুতার দোকান মিলিয়ে ১০ হাজারেরও বেশি দোকান রয়েছে। সে
হিসেবে রোজার শেষ ১০দিনে কুমিল্লা মহানগরীতে ৫ শ’ কোটি টাকারও বেশি
মালামাল বিক্রি হতে পারে।
বিষয়টির সাথে একমত পোষণ করেছেন কুমিল্লা দোকান
মালিক সমিতির সভাপতি আতিকুল্লাহ খোকন। তিনি বলেন, আমাদের সকল দোকানের
বিক্রি সমান নয়। কিছু দোকানে বেশি বিক্রি কিছু দোকানে কম বিক্রি। গড়ে
প্রতিটি দোকানে ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত মালামাল
বিক্রি হয়। তবে শপিংমলের দোকান গুলোতে বেশি বিক্রি। এছাড়াও বাইরের যে দোকান
রয়েছে সেগুলোতেও ভালো বিক্রি হচ্ছে। তবে গড়ে প্রতি দোকানে ৫০ হাজার করে
দিনে বিক্রি হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
আতিকুল্লাহ খোকন বলেন, করোনার
কারণে গেলো দুই বছর কোনো উৎসব-পার্বণেই দোকানীরা বেচাবিক্রি করতে পারেনি।
এবার আল্লাহর রহমতে করোনা কমেছে, দোকানগুলোতে ভালো বিক্রি হচ্ছে। তবে এক
ঈদেই দুই বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে না। তারপরও আমরা আশাবাদি দোকানিরাও
তাদের বিনিয়োগ তুলে কিছুটা লাভবান হতে পারবেন।
বেচাকেনার এ স্রোত ২০
রমজানের পর থেকেই শুরু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেশি বেচাকেনা কেবল শেষ
১০ দিনেই হয়। তারপরও আলহামদুলিল্লাহ। ক্রেতারা মার্কেটমুখি হচ্ছে,
বিক্রেতারাও লাভের মুখ দেখছে। দেখাযাক শেষ পর্যন্ত কি হয়।
কুমিল্লা
বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ১৫ রমজানের পরই ভীড়
বাড়তে থাকে কুমিল্লার শপিংমল গুলোতে। তবে শেষ দশ দিনকেই ভাগ্য বদলের দিন
বলে মনে করছেন তারা।
কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় এলাকা,
ঝাউতলা, চকবাজার ও রাজগঞ্জ এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী জানান, শুধু ইফতারের সময়
৩০ মিনিটের বিরতি ছাড়া মধ্যরাত পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। এভাবে চলতে থাকলেই
তারা খুশি।
কান্দিরপাড় এলাকার সাত্তার খান কমপ্লেক্স, খন্দকার, ময়নামতি
মার্কেট, প্ল্যানেট এস আর, সমতট মার্কেট, নিউ মার্কেট, এসবি প্লাজা,
শাসনগাছা এলাকার ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজায় গিয়ে দেখা যায় সব বয়সী মানুষের
পড়া ভিড়। কেউ দোকানে ঢুকছেন কেউ কেনাকাটা শেষে বের হচ্ছেন। উৎসবের আমেজে
সবার মুখেই হাসি। এভাবেই সকাল ১০ টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত জমজমাট থাকে
কুমিল্লা নগরীর বিপণিবিতানগুলো। দিনের তুলনায় সন্ধ্যা ও রাতে বেশি
বিকিকিনির ধুম পড়ে। অনেক ব্যবসায়ী ঋণ করে পণ্য দোকানে এনেছেন গত দুই বছরের
করোনার ক্ষতি পোষাতে। দামাদামি না করেই যেন ক্রেতার হাতে পণ্য তুলে দিতে
পারেন সে কারণে লাগামের মধ্যেই দাম বলে বিক্রি করছেন তারা।
কুমিল্লা
দোকান মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা নগরীতে ৩০ হাজারের বেশি
দোকান রয়েছে। এর মধ্যে শুধু পোশাক ও জুতার দোকান রয়েছে প্রায় ১০ হাজার।
যেগুলোতে রোজার শেষ দশ দিনে ৫০ হাজার টাকা করে গড়ে বিক্রির লক্ষ্য রয়েছে।
সে হিসেবে ১০ হাজার দোকানের ১০ দিনের বিক্রির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা।