ঈদের
আগে আবারও বেসামাল হয়ে পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজার। নতুন করে বেড়েছে চাল,
ডাল, তেল, আটা, ময়দার, রসুন, পেঁয়াজসহ মসলা জাতীয় পণ্যের দাম। ঈদের আগে
বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে
লিটারে ৩০ টাকার বেশি।
বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দাম
বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা।
গরুর মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা। ফলে ৭০০ টাকার নিচে এখন গরুর
মাংসের কেজি পাওয়া যাচ্ছে না।
সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র তথ্য
অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিতে প্রায় চার শতাংশ। সরু
চালের দাম বেড়েছে দুই শতাংশ।
বাজারের অধিকাংশ দোকানে সয়াবিন তেলের সংকট
দেখা দিয়েছে। ক্রেতারা অনেক দোকান ঘুরে তারপর সয়াবিন পাচ্ছেন। সয়াবিনের
সংকটের চিত্র উঠে এসেছে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র তথ্যেই। সংস্থাটি
বলছে, গত এক সপ্তাহে সয়াবিনের দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশের বেশি। গত সপ্তাহে যে
সয়াবিনের (খোলা) লিটার ছিল ১৫৫ টাকা, এই সপ্তাহে সেই সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে
১৮৪ টাকা লিটার। টিসিবি’র হিসাবে খোলা পাম অয়েলের দাম বেড়েছে ১৪ শতাংশ।
অর্থাৎ ১৪৫ টাকা লিটার খোলা পাম অয়েলের দাম এখন ১৬৫ টাকা।
পাম সুপারের দাম বেড়েছে লিটারে ২২ টাকা। গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া ১৫০ টাকা লিটার পাম অয়েলের দাম এখন ১৭২ টাকা।
অস্বাভাবিক
দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে রসুন। গত সপ্তাহের ৬০ টাকা কেজি দেশি রসুন এই
সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা।
টিসিবি’র হিসাবে দাম বৃদ্ধির হার ৩০ শতাংশ। দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫
শতাংশের বেশি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ ২৮ টাকায় পাওয়া
যেতো, এই সপ্তাহে দাম বেড়ে হয়েছে ৩০ টাকা।
আমদানি করা ১০০ টাকা কেজি
আদার দাম বেড়ে হয়েছে ১২০ টাকা। অর্থাৎ কেজিতে দাম বেড়েছে ২০ টাকা। টিসিবি’র
হিসাবে গত এক সপ্তাহে এই পণ্যটির দাম বেড়েছে ১২ শতাংশের মতো। আমদানি করা
১৪০ টাকা কেজি হলুদের দাম বেড়ে হয়েছে ১৬০ টাকা। অর্থাৎ কেজিতে দাম বেড়েছে
২০ টাকা। টিসিবি’র হিসাবে গত এক সপ্তাহে এই পণ্যটির দাম বেড়েছে ৭ শতাংশের
মতো। গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া ৪০০ টাকা কেজি আদার দাম বেড়ে হয়েছে ৪৩০ টাকা।
অর্থাৎ কেজিতে দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। টিসিবি’র হিসাবে গত এক সপ্তাহে এই
পণ্যটির দাম বেড়েছে ৪ শতাংশের মতো।
বাজারে খোলা ময়দার দাম বেড়েছে কেজিতে
৫ টাকা। গত সপ্তাহে যে ময়দার কেজি ছিল ৫০ টাকা, এই সপ্তাহে সেই ময়দার কেজি
বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে এই পণ্যটির
দাম বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি। একইভাবে প্যাকেট ময়দার দাম বেড়েছে ৮ শতাংশের
বেশি। গত সপ্তাহে যে ময়দার দাম ছিল ৬০ টাকা কেজি, এই সপ্তাহে সেই ময়দা
বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি।
ঈদের আগে বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির দাম
বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা।
এদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে
পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দাম। সেই সঙ্গে অপরিবর্তিত রয়েছে প্রায় সব
ধরনের সবজির দাম।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি
হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। তবে সোনালি
মুরগির কেজি গত সপ্তাহের মতো ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার
(২৯ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্যবসায়ীরা গরুর মাংসের কেজি বিক্রি
করছেন ৭০০ টাকা থেকে ৭১০ টাকা। অনেকে গরুর মাংস বিক্রি করছেন ৭২০ থেকে ৭৩০
টাকা। এক সপ্তাহ আগে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে গরুর মাংসের কেজি ছিল ৬৫০
থেকে ৬৮০ টাকা।
রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। এক কেজি
ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৬০০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছের
কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০
থেকে ৪৬০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা।
সবজির
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের মতো গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে
৭০ টাকা। এছাড়া ব্যবসায়ীরা বেগুনের কেজি বিক্রি করছেন ৫০ থেকে ৭০ টাকা।
শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। পটলের কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা,
বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। লাউয়ের পিস
বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালংশাকের
আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। সজনের ডাটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে
৬০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। পেঁপের কেজি
বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০
টাকা। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা।