Published : Saturday, 30 April, 2022 at 12:00 AM, Update: 30.04.2022 12:32:48 AM
নামাজের
ন্যায় যাকাত ও ইসলামের অন্যতম রুকন ও মৌলিক ভিত্তি। তাই যাকাত আদায় না করা
ইসলামের শরীআতের দৃষ্টিতে জঘন্য অপরাধ। যেই ব্যক্তির উপর যাকাত ফরয সে
যাকাত না দিলে আখেরাতে তাকে ভীষণ শাস্তি ভোগ করতে হবে। কোরআন মাজিদে সুরা
তাওবাতে যাকাত না দেওয়ার পরিণাম সম্পর্কে এরশাদ করা হয়েছে, যারা সোনারূপা
পুঞ্জিভূত করে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক
শাস্তির সংবাদ দিন। যে দিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তা
দিয়ে তাদের কপাল, পার্শ্বদেশ, পিঠে দাগ দেয়া হবে। সে দিন বলা হবে, এটাই হল
তা যা তোমার নিজেদের জন্য পুঞ্জিভূত করতে। সুতরাং তোমরা যা পুঞ্জিভূত করেছ
তা আস্বাদন কর। যাকাত না দেয়ার ইহকালীন পরিণাম সম্পর্কে নবী করীম (স.)
বলেছেন- যে সব লোক যাকাত দিতে অস্বীকার করবে আল্লাহ তাদের কঠিন ক্ষুধা ও
দুর্ভিক্ষে নিমজ্জিত করবেন। অপর এক হাদিসে এরশাদ হয়েছে যে মালের সাথে যাকাত
মিশ্রিত হয় সে মাল-কে অবশ্যই ধ্বংশ করে দেওয়া হয়। যাকাত আদায় না করে
কৃপণতার শাস্তি সম্পর্কে সুরা আলে ইমরানে আল্লাহতালা এরশাদ করেন। আর আল্লাহ
নিজ অনুগ্রহে যা তাদেরকে দিয়েছেন তাতে যারা কৃপণতা করে তাদের জন্য তা
মঙ্গল- এ যেন তারা কিছুতেই মনে না করে। না এটা তাদের জন্য অমঙ্গল, যাতে
তারা কৃপণতা করবে কিয়ামতের দিন তাই তাদের গলায় বেড়ি হবে। হাদীস শরীফেও
যাকাত আদায় না করার ভয়াবহ পরিণতির কথা উল্লেখ রয়েছে।
হযরত আবু হুরায়রা
(রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসূল (স.) বলেন- আল্লাহ যাকে ধন সম্পদ দিয়েছেন, সে
যদি তার যাকাত আদায় না করে তা হলে কিয়ামতের দিন তা একটি বিষধর অজগরের রূপ
ধারণ করবে যার দু'চোখের উপর দুটি কালো চিহ্ন থাকবে। কিয়ামতের দিন তার গলায়
জড়িয়ে দেওয়া হবে। সাপটি তার মুখের দু'পাশে কামড়াতে থাকবে এবং বলবে আমিই
তোমার সম্পদ, আমিই তোমার পুঞ্জিভূত ধন। তারপর নবী করীম (সা.) এ আয়াতটি
তিলাওয়াত করলেনঃ অর্থ আর আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে যা তাদেরকে দিয়েছেন তাতে যারা
কৃপণতা করে, তা তাদের জন্য অমঙ্গল। যাতে তারা কৃপণতা করবে কিয়ামতের দিন
তা-ই তাদের গলায় বেড়ি হবে। একদিন নবী করীম (সা.) দেখলেন যে, দু'জন মহিলা
তাদের হাতে সোনার কংকন পরিধান করে আছে। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা
এর যাকাত দাও কিনা, তারা বললেন না। নবী করীম (সা.) বললেন, তোমরা কি তাহলে
এটা চাও যে, এগুলোর পরিবর্তে তোমাদের আগুনের কংকন পরানো হবে? তারা বললো না
না, কখনই নয়। তখন নবী করীম (সা.) বললেন, এগুলোর যাকাত দিতে থাকো। যাকাত যে
ফরয তা কুরআন ও হাদীসে রাসুলের মাধ্যমে আমরা ইতিপূর্বে জানতে পেরেছি।
ইসলামী শরী'আতের দৃষ্টিতে ফরযকে অস্বীকারকারী হল কাফির। পবিত্র কুরআনে
আল্লাহতাআলা যাকাত আদায় না করাকে মুশরিদের কাজ বলেছেন। ধ্বংস অনিবার্য, ঐ
সকল মুশরিকদের জন্য যারা যাকাত আদায় করেনা।