দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্টে বহাল থাকা ১০ বছরের সাজা থেকে খালাস চেয়ে আপিল করেছেন সংসদ সদস্য (এমপি) হাজী মোহাম্মদ সেলিম। আইনজীবীর মাধ্যমে খালাস চেয়ে তিনি এ জামিন আবেদন করেছেন।
মঙ্গলবার সকালে হাজী সেলিমের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, রোববার দুর্নীতির মামলায় ১০ বছর দণ্ডিত হাজী সেলিম বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে যেকোনো শর্তে জামিনের আবেদন করেন। দুপুর ২টার দিকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলামের আদালতে এ আবেদন করে তিনি। এছাড়া কারাগারে উন্নত চিকিৎসা ও প্রথম শ্রেণির ডিভিশন চেয়ে আরও দুটি আবেদন করা হয়।
এরপর সাজা ভোগের জন্য তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। রোববার বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে আদালত থেকে পিকআপ ভ্যানে তাকে নিয়ে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশ্যে রওনা হয় পুলিশ। সন্ধ্যা ৬টার দিকে কারাগারে পৌঁছান তিনি।
এরপর তাকে সোমবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করা হয়। বিএসএমএমইউয়ের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সে সময় তিনি বলেন, হৃদরোগজনিত সমস্যার কারণে হাজী সেলিমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কার্ডিয়াক বিভাগের অধ্যাপক ডা. হারিসুল হকের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। আমরা তার শারীরিক কন্ডিশন দেখে পরে বিস্তারিত জানাব।
এদিকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছর কারাদণ্ড বহালের রায়ের নথি হাইকোর্ট থেকে গত ২৫ এপ্রিল নিম্ন আদালতে পাঠানো হয়। নিয়মানুযায়ী ২৫ এপ্রিল থেকে ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই (২২ মে) আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন।
পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ঐ আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের আগের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টেই শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
২০২১ সালের ৯ মার্চ বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিয়েছিলেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রায় প্রকাশ করা হয়।