সিলেটে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বন্যা। বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ। পর্যাপ্ত নৌকা ও উদ্ধারকর্মী না থাকায় পানিতে আটকাপড়া মানুষ উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ নৌকা ও উদ্ধার সরঞ্জামাদি না থাকায় জেলা প্রশাসক সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন।
শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারসহ সার্বিক সহযোগিতা চেয়ে ১৭ পদাতিক ডিভিশন সিলেটের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সিলেট জেলায় অব্যাহত ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ঢলের ফলে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। অব্যাহতভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলা সদরের সাথে বিভিন্ন উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বেশ কয়েকটি উপজেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিশেষত গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও সিলেট সদর উপজেলার সবকয়টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি মানুষের উদ্ধারের লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সার্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।’
জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিকট প্রয়োজনীয় নৌকা এবং অন্যান্য সরঞ্জামাদি না থাকায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। জরুরিভিত্তিতে পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করা সম্ভব না হলে মানবিক বিপর্যয় ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে উদ্ধার তৎপরতা এবং অন্যান্য সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতার একান্ত প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছে।
এমতাবস্থায়, সিলেট জেলার দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান করার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২ এর ৩০ ধারা মোতাবেক জরুরিভিত্তিতে পানিবন্দিদের উদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য সবিনয় অনুরোধ করা হলো।’
প্রসঙ্গত, সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, সদর ও বিশ্বনাথ উপজলোয় বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। পানিবন্দি মানুষ কোনভাবেই নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারছেন না। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় বৃহস্পতিবার রাত অন্ধকারে কাটাতে হয়েছে তাদের। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য মানুষের মধ্যে রাতভর ছিল আর্তনাদ। এই অবস্থায় উদ্ধার তৎপরতার জন্য সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানোর দাবি ওঠে।