তানভীর দিপু:
কুমিল্লায়
বন্যা নিয়ে আপাতত ভয়ের কোন কারণ নেই বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা পানি উন্নয়ণ
বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশল মোঃ আবদুল লতিফ। তবে গত বৃহস্পতিবার থেকে
গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধ এবং সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায়
কুমিল্লাবাসীর মনেও বন্যা কিংবা নদী ভাঙ্গনের শংকা তৈরী হয়েছে। এদিকে ভার
থেকে চৌদ্দগ্রাম হয়ে প্রবাহিত কাকড়ী নদীতে পানি না বাড়লেও, ব্রাহ্মণপাড়া
হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা সালদা নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। মেঘনা ও
ডাকাতিয়ার পানিও স্বাভাবিক অবস্থানে রয়েছে।
পাউবোর তত্ত্বাবধায়ক
প্রকৌশলী কুমিল্লার কাগজকে জানান, ভারতের ত্রিপুরায় বন্যা বা প্লাবণ না
হওয়ায় কুমিল্লা আপাতত সেইফ জোনে আছে। তবে গোমতী নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে।
ভারতে বন্যা হচ্ছে মেঘালয় ও আসাম অঞ্চলে যার প্রভাব বাংলাদেশের
সিলেট-সুনামগঞ্জে দেখা দিয়েছে। আর কুমিল্লার নদীগুলোর বাঁধ ঠিকঠাক আছে -
কোন শংকার কারণ নেই।
পানি উন্নয়ণ বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান
মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান জানান, গোমতীতে তেমন পানি বাড়ে নি, তবে এখন কি
অবস্থা বা কি উচ্চতায় পানি আছে আমরা কাল(আজ) জানাতে পারবো। কাকড়ী নদীতে
পানি বাড়েনি। তবে ব্রাহ্মণপাড়া হয়ে সালদা নামে যে নদীটি বাংলাদেশে প্রবেশ
করেছে - সেখানে কিছুটা পানি বেড়েছে।
জানা গেছে, ভারত থেকে কুমিল্লা
হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে গোমতী ও কাকড়ী নদী। গোমতী প্রবেশ করেছে
কুমিল্লার সদর উপজেলা হয়ে এবং কাকড়ী প্রবাহিত হয়ে প্রবেশ করেছে চৌদ্দগ্রাম
উপজেলা হয়ে। তবে খরস্রোতা এবং উজানে ভারতের পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য
বাঁধ তৈরী হওয়ায় নদী দুইটিতে সচরাচর বান আসে না। অপরদিকে কুমিল্লায়
ডাকাতিয়া এবং মেঘনা যে অংশ রয়েছে সেখানেও পানি স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানা
গেছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগসংক্রান্ত
ওয়েবসাইটে শনিবারের দৈনিক প্রতিবেদনে নদ-নদীর পরিস্থিতি এবং পূর্বাভাসের
চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, সুরমা ছাড়া দেশের সব প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি সমতল
বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর গাণিতিক মডেলভিত্তিক পূর্বাভাস অনুযায়ী
আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের
আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের কিছু স্থানে মাঝারি থেকে
ভারী, কোথাও কোথাও অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে ৪৮ ঘণ্টায়
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা, কুশিয়ারা, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমারসহ
প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর
পানি সমতল বিপৎসীমার কাছাকাছি অথবা ওপরে অবস্থান করতে পারে।
আজ সকাল
নয়টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জে পুরাতন সুরমা, কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার,
ধরলা, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে যমুনা, নেত্রকোনার সোমেশ্বরী ও কংস, সিলেটে
সুরমা, কুশিয়ারা সারিগোয়ান ও খোয়াই নদ–নদীর পানির বিপৎসীমার ওপর দিয়ে
যাচ্ছে।