দিল্লিগামী বিমানটির সঙ্গে পাখির ধাক্কা লাগে, তাতেই আগুন লাগে স্পাইসজেটের একটি বিমানে। এরপরই বিমানটিকে জরুরি অবতরণ করানো হয়। রোববার দিল্লিগামী বিমানটির সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে। তবে ভাগ্য ভালো যে, কোনো মতে রক্ষা পায় বিমানটি; নয়তো যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো।
ওই বিমানটি রক্ষা পেলেও ইতিহাস বলছে, এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যেখানে বিমান বা তার কর্মী বা যাত্রীরা কেউই রক্ষা পাননি। কিছু ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সব কিছু শেষ হয়ে যায়। কিছু ঘটনার নেপথ্যে থাকে রহস্যময় কোনো কারণ। তেমনই একটি কাহিনি এখানে বলা হবে।
বিমান ওড়ার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল। ঠিক তার আগেই ককপিটে রীতিমতো ধুন্ধুমার কাণ্ড! সহকর্মীর সঙ্গে পাইলটের তুমুল তর্কবিতর্ক, হাতাহাতি। যার পরিণতি যে এতটা ভয়ঙ্কর হবে, তা বোধহয় আজও ভাবলে আঁতকে ওঠেন ব্রিটেনবাসী।
১৯৭২ সালের ১৮ জুন। ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিমান- দুর্ঘটনা হিসেবে অবশ্যই শীর্ষে থাকবে ব্রিটিশ-ইওরোপিয়ান এয়ারওয়েজের বিমান ৫৪৮-এর পরিণতি। লন্ডনের হিথরো থেকে ব্রাসেলসগামী ওই বিমান ভেঙে পড়েছিল সারের স্টেইনসের মাটিতে।
জানা যায়, বিমানটির টেক-অফের প্রায় এক ঘণ্টা আগে পাইলট স্ট্যানলি কে’র সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদ বাধে সহকর্মী ফ্ল্যাভেসের। বেতন কাঠামোর উন্নতির দাবিতে আন্দোলন করছিলেন তরুণ পাইলটরা। যার তীব্র বিরোধিতা করেন স্ট্যানলি।
বিরোধিতা করায় বিক্ষোভরত তরুণ পাইলটদের রোষের মুখে পড়েন স্ট্যানলি। হকার সিডেলি ট্রাইডেন্টসহ একাধিক সংস্থার বিমানে স্ট্যানলির অপমানজনক ছবি দেওয়া হয়। ‘কে মাস্ট গো’, এই লেখা-সহ স্ট্যানলির ছবি চতুর্দিকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
বিমানের ইঞ্জিনিয়ারদের টেবিলেও স্ট্যানলির ছবি লাগিয়ে দেওয়া হয়। এর জেরে বেজায় চটে যান স্ট্যানলি। পরে জানা যায়, তিনি আগে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বাদানুবাদের সময় রাগারাগিতে তার রক্তচাপ বেড়ে যায়। তারপরই ঘটে যায় দুর্ঘটনা।
টেক-অফের পরই গতি সংক্রান্ত সমস্যা দেখা যায়। আচমকাই বিমানটি থেমে যায়। পর্যাপ্ত উচ্চতায় না থাকায় বিমানটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি ক্রু-রা। দুই টুকরো হয়ে যায় বিমানটি। তারপর উল্লম্বভাবে মাটিতে পড়ে ভেঙে যায়।
বিমানটিতে মোট ১১৮ জন ছিলেন। তাদের সকলেরই মৃত্যু হয়। বিমান দুর্ঘটনার ৫০ বছর পূর্তিতে স্টেইনসে একটি সৌধ বানানো হয়েছে।
