Published : Wednesday, 22 June, 2022 at 12:00 AM, Update: 22.06.2022 12:55:25 AM
শাহীন আলম, দেবিদ্বার ||
কুমিল্লার
দেবিদ্বারে গোমতী নদীর পানি প্রতি ঘন্টায় ৭ সে. মি. উচ্চতায় বাড়ছে। এ
এলাকায় সর্বোচ্চ বিপদসীমা রয়েছে ৮দশমিক ৫সে.মি.। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ৭
দশমিক ৫ সে.মি.উচ্চতায় পানি প্রবাহমান হচ্ছে। এ উচ্চতা পরিমাপ করা হয়
দেবিদ্বার অংশে।
এদিকে, ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের
বেঁড়িবাঁধের ভিতরের দুটি গ্রাম। গ্রামগুলো হলো, রঘুরামপুর ও গঙ্গানগর। ওই
এলাকার প্রায় ১২শ মানুষ পানিবন্ধী অবস্থায় রয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে পানিবন্ধী
লোকজন ও গবাদী পুশুদের জাফরগঞ্জ মীর আবদুল গফুর কলেজের আশ্রয় কেন্দ্রে
সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ওই এলাকা ছাড়াও দেবিদ্বার পৌর এলাকার পুরাতন বাজার
বেঁড়িবাঁধের ভিতরের ১০/১২ টি পরিবার পানিবন্ধী অবস্থায় রয়েছে।
মঙ্গলবার
দুপুরে রঘুরামপুর এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ডুবে গেছে ঘরবাড়ি,
রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ ফসলী জমি। কেউ কেউ কোমর পর্যন্ত
পানিতে ভিজে মাথায় আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে নৌকায় তুলছেন। অনেকের
পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ায় ক্ষতির মুখেপড়েছেন মাছ চাষীরাও।
রঘুরামপুর
এলাকার হাসান আলী বলেন, রাতে ভয়ানক পরিস্থিতিতে ছিলাম। হঠাৎ করেই উঠানে
পানি, সারা গ্রামে পানি চলে আসায় এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
কেউ কেউ রাতেই এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। তবে এখনো অনেক মানুষ পানিবন্ধী অবস্থায়
রয়েছে। পানি বেড়েই চলছে।
গঙ্গানগর এলাকার কৃষক আবদুর রহিম বলেন, ঢলের
পানিতে চরে লাগানো আমার ২৫বিঘা জমির শাক-সবজি তলিয়ে গেছে। এই আরও অনেকের
ফসল রয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।
জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসেন জানান, এই ইউনিয়নের দুটি গ্রামে প্রায় সাড়ে ৪শ
পরিবার পানিবন্ধী অবস্থায় রয়েছে। তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া
হচ্ছে। আশ্রয় কেন্দ্রে তাদের থাকা ও খাওয়ার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কুমিল্লা
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকোশলী মো.সেলিম জানান, গোমতী নদীর পানি
৮দশমিক ৫ মিটার বিপদসীমার বিপরীতে বর্তমানে পানির স্তর রয়েছে ৭ দশমিক
১০মিটার। প্রতি ঘন্টায় ৭ থেকে ১০ সে.মি উচ্চতায় বাড়ছে। পানি বিপদসীমার
কাছাকাছি চলে এসেছে। তবে রাতের দিকে পানি কমার সম্ভবনা রয়েছে।
দেবিদ্বার
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিক উন নবী তালুকদার জানান, বেঁড়িবাঁধের নিচে
হওয়ায় দেবিদ্বার উপজেলার দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে লোকজনদেরকে
নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ
মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন অবস্থানে সর্তক রয়েছে।