দেশে
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী ধারার মধ্যে চার মাস পর দৈনিক শনাক্ত
রোগীর সংখ্যা ফের হাজার ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার
সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৮ হাজার ৫৩৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ১১৩৫ জন নতুন রোগী
শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে আরও একজনের।
সর্বশেষ গত ২৫ ফেব্রুয়ারির
একদিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল। সেদিন ১ হাজার ৪০৬ জনের কোভিড
শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
১৫ ফেব্রুয়ারির পর
প্রথমবারের মত দৈনিক শনাক্তের হার ১৩ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। বুধবার নমুনা
পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। আগের দিন মঙ্গলবার এই হার
ছিল ১১ দশমিক ০৩ শতাংশ।
মাঝে ২০ দিন দেশে কোভিডে কারও মৃত্যুর খবর ছিল না। কিন্তু গত তিন দিন ধরে আবারও দিনে ১ জন করে মৃত্যু হচ্ছে।
নতুন
রোগীদের নিয়ে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯ লাখ ৫৯ হাজার ২০৯
জন। তাদের মধ্যে ২৯ হাজার ১৩৪ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও ১২২ জন কোভিড রোগী। তাদের নিয়ে ১৯ লাখ ৬ হাজার ১০৫ জন সেরে উঠলেন।
করোনাভাইরাসের
নতুন ধরন ওমিক্রমণের দাপট কমলে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে দৈনিক শনাক্ত রোগীর
সংখ্যা হাজারের নিচে নেমে এসেছিল। ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে এক পর্যায়ে ২৬
মার্চ তা একশর নিচে নেমে আসে।
সংক্রমণ কমার ধারায় গত ৫ মে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমেছিল ৪ জনে। তবে গত ২২ মের পর থেকে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আবারও বাড়ছে।
১১ সপ্তাহ পর দৈনিক শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা গত ১২ জুন আবার একশ ছাড়িয়ে যায়। ১০ দিনের মাথায় বুধবার তা হাজার ছাড়িয়ে গেল।
গত
এক দিনে শনাক্ত ৮৭৪ নতুন রোগীর মধ্যে ১০৬৯ জনই ঢাকা মহানগর ও জেলার
বাসিন্দা। সত্তরোর্ধ্ব যে পুরুষের মৃত্যু হয়েছে, তিনি ছিলেন সিলেট বিভাগের
বাসিন্দা।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়েছে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রাজশাহী,
খুলনা, বরিশাল, সিলেট বিভাগের ২৩টি জেলায়। তবে রংপুর বিভাগে কোনো শনাক্ত
রোগী পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা
ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬
হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০
সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
২০২১ সালের ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর
মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৬৩ লাখ ২২ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৫৪ কোটি ৬ লাখ।