চট্টগ্রামে র্যাব পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) বায়েজিদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার (২ জুলাই) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-৭ এর পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থানাধীন মাইজারা গ্রামের বাদশা মিয়া ওরফে বাচ্চু মিয়ার ছেলে প্রতারক চক্রের মূল হোতা মো. রুবেল হোসেন, তার ভাই মো. মানিক হোসেন (৩৮), ভোলার দক্ষিণ আইছা থানার আইছা গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম (৪৫), ঝালকাঠির নলছিটি থানার মো. সোহরাব শরীফের ছেলে মো. মিজানুর রহমান (৩৪), ভোলার সদর থানার চরসামিয়া গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে মো. নীরব (২১), চট্টগ্রামের খুলশী থানার গরীবুল্লাহ হাউজিং সোসাইটির মৃত মোস্তফার ছেলে আবু তৈয়ব সিদ্দিকী ওরফে মিঠু (৪৯)।
র্যাব জানায়, গত ২৬ জুন আগ্রাবাদ থেকে জাল স্ট্যাম্পসহ মো. ইদ্রিস পাটোয়ারী (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতারের পর প্রতারক রুবেল নিজেকে র্যাবের ক্যাম্প কমান্ডারের গাড়িচালক পরিচয় দিয়ে ইদ্রিসের স্ত্রীকে ফোন দেন। রুবেল বলেন, আপনার স্বামীর কাছে কোনো ধরনের অবৈধ জিনিস পাওয়া যায়নি, আপনার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়া হবে, যদি আপনি অফিস খরচ ও স্যারের জন্য পাঁচ লাখ টাকা দেন।
ইদ্রিস পাটোয়ারীর স্ত্রী এত টাকা দিতে পারবেন না বলে জানান। এরপর রুবেল জানতে চান, তিনি কত টাকা দিতে পারবেন। ইদ্রিসের স্ত্রী ৫০ হাজার টাকা দিতে পারবে বলে জানান। প্রতারক রুবেল তখন এক লাখ টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে ইদ্রিসের স্ত্রী ৭০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। পরে গত ২৬ জুন ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ ডেবার দক্ষিণ পাড়ের একটি বিকাশের দোকান থেকে প্রতারক রুবেলের দেওয়া ৫টি নাম্বারে মোট ৭০ হাজার টাকা পাঠান। কিন্তু পরদিন ইদ্রিস পাটোয়ারী বাসায় না ফেরায় তার স্ত্রী ডবলমুরিং থানা ও হাটহাজারী র্যাব ক্যাম্পে যোগাযোগ করেন। এরপর তিনি জানতে পারেন তার স্বামীর নামে ডবলমুরিং থানায় মামলা হয়েছে।
এ তথ্য জানার পর ইদ্রিসের স্ত্রী প্রতারক রুবেলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি নানা টালবাহানা করতে থাকেন। ইদ্রিসের স্ত্রী খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন রুবেল সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। এরপর ইদ্রিসের স্ত্রী বিষয়টি র্যাবকে জানান। তার তথ্যের ভিত্তিতে গত ৩০ জুন বায়েজিদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে রুবেলসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
এ বিষয়ে র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার বলেন, নগরীতে কিছু প্রতারকচক্র সংঘবদ্ধভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, র্যাব পরিচয় দিয়ে লোকজনের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল। একই কায়দায় ইদ্রিসের স্ত্রীকে ফোন দিয়ে ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। ইদ্রিসের স্ত্রী বিষয়টি আমাদের জানানোর পর গোয়েন্দা তথ্য ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ইদ্রিসের ৭০ হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতারক রুবেল দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কৌশলে লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আবার সেই মামলা থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন। তাদের সবার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।