মো. হাবিবুর রহমান
কুমিল্লার মুরাদনগরে প্রকাশ্য লোকসমাজে মরিয়ম বেগম (৩৬) নামে এক নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় শারীরিক নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির আলোচিত ঘটনায় অবশেষে মামলা নিয়েছে পুলিশ। দৈনিক কুমিল্লার কাগজসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ মামলা গ্রহণপূর্বক এজহারভূক্ত ৭ নম্বর আসামি চুলের মুঠি ধরে নির্যাতনকারী সেই জামাল মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার সকালে আহত মরিয়ম বেগম বাদী হয়ে ওই মামলা দায়েরের পর দুপুরে পুলিশ নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের উত্তর ত্রিশ গ্রামে এক অভিযান চালিয়ে জামাল মিয়াকে (২৭) গ্রেফতার করে। সে ওই গ্রামের ইউনুস মিয়ার ছেলে। অভিযানের নেতৃত্ব দেন, মুরাদনগর থানার এসআই হামিদুল ইসলাম বিপিএম। মামলায় অপর অভিযুক্তরা হলো, উত্তর ত্রিশ গ্রামের মৃত শাহ আলম মেম্বারের ছেলে ও ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন (৪০), তার ছোট ভাই সুমন সরকার (৩৮), সুধন মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়া (৩৪) ও হাবিব মিয়া (৩২), হাসু মিয়ার ছেলে হেলাল মিয়া (৩২), তবদুল মিয়ার ছেলে রনি মিয়া (২৮) ও লতু মিয়ার ছেলে আলমগীর মিয়া (৩৮)।
মুরাদনগর থানার ওসি আবুল হাসিম দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর শনিবার সকালে মামলা রুজু করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাৎক্ষনিক একজনকে গ্রেফতার করেছি। অপর আসমিরা পলাতক রয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতার করতে বিভিন্ন স্থানে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধ এবং গত ইউপি নির্বাচনে ভোট না দেওয়ার তথাকতিথ অভিযোগ এনে গত ২৮ জুন মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ত্রিশ গ্রামের মানবাধিকার এবং ইন্টারন্যাশনাল লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশনের কর্মী মরিয়ম বেগমকে লোক মারফত ডেকে আনা হয়। পরে উত্তর ত্রিশ গ্রামের সুরুজ মিয়া মার্কেটে সালিশ বসে। এ সময় ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন তার দলবল নিয়ে ওই নারীকে শ্লীলতাহানিসহ ব্যাপক মারধর করেন। এক পর্যায়ে আত্মরক্ষায় ওই নারী এদিক সেদিক ছোটাছুটি করলেও হামলাকারীরা তাকে দৌড়ে গিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। মারধরের সময়ে ধারণকৃত সিসিটিভির ফুটেজ ভাইরাল হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।