দেশে এক বছরে মিনিপ্যাক বর্জ্যই ২ লাখ টন: গবেষণা
Published : Sunday, 3 July, 2022 at 12:00 AM
দেশে সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে ১০ লাখ ৬০ হাজার টন একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে, যার মধ্যে এক লাখ ৯২ হাজার ১০৪ টনই বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর মিনিপ্যাক বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
শনিবার গবেষণা সংস্থা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) লালমাটিয়ায় নিজেদের কার্যালয়ে ‘প্লাস্টিক স্যাশে: স্মল প্যাকেট উইথ হিউজ এনভায়রনমেন্ট ডেস্ট্রাকশন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এই তথ্য তুলে ধরে।
এসডোর গবেষণা অনুযায়ী, কেবল খাবারের (চিপস, টমেটো সস, জুস, গুঁড়ো দুধ, কফি ইত্যাদি) মিনিপ্যাকেই ৪০ শতাংশ ক্ষুদ্র প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে। প্রসাধনীর (শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, টুথপেস্ট ও মাউথ ফ্রেশনার) ক্ষেত্রে এই হার ২৪ শতাংশ, ওষুধের (স্যালাইনের প্যাক, মেডিসিন স্ট্রিপ) দায় ৮ শতাংশ এবং মশলা, বেভারেজ ও গৃহস্থালি পরিচ্ছন্ন সামগ্রীর দায় ৭ শতাংশ করে। বাকি ৭ শতাংশ বর্জ্য উৎপাদন হয় অন্যান্য মিনিপ্যাকে।
বৈঠকে এসডোর সভাপতি সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, “প্লাস্টিকের মিনি প্যাকেট পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক। প্লাস্টিকের মিনি প্যাকেট আকারে ছোট হলেও পরিবেশে এর প্রভাব বিশাল।”
সাবেক এই সচিব সরকারের কাছে মিনিপ্যাক ব্যবহারের ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর করার অনুরোধ জানান।
ক্ষুদ্র প্লাস্টিক বর্জ্যের ভয়াবহতা তুলে ধরে এসডোর মহাসচিব শাহরিয়ার হোসেন বলেন, “একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দূষণ রোধে আমাদের সেই সময়ে ফিরে যেতে হবে যখন বাজারে স্যাশে (মিনিপ্যাক) ছিল না এবং মানুষ কেনাকাটার জন্য রিফিল সিস্টেম ব্যবহার করত।
“...আমাদের একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের কাঁচামাল, উৎপাদন ও বিপণনের উপর অধিক শুল্ক আরোপ করতে হবে।”
বৈঠকে বলা হয়, কেবল কক্সবাজারেই এক বছরে ৬৯ হাজার ৮৪১ টন (১৩,৯৬৮ টন মিনিপ্যাক) একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্য মিলেছে, আর কুতুপালং এলাকায় এর পরিমাণ ৯ হাজার ৭৩ টন (১৬৩৩ টন মিনিপ্যাক) টন।
মিনিপ্যাক নিয়ন্ত্রণে আইনি কাঠামো বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা বলেন, “জাতিসংঘ এনভায়রনমেন্টাল অ্যাসেম্বলি (ইউনিয়া ৫.২) এরইমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে একটি আন্তঃসরকারি কমিটি গঠন করার এবং ২০২৪ সালের মধ্যে লিগ্যালি বাইন্ডিং প্লাস্টিক কনভেনশন নিয়ে আলোচনা ও চূড়ান্ত করার। বাংলাদেশসহ ১৭৫টি দেশ এই বৈশ্বিক প্লাস্টিক চুক্তিতে সম্মত হয়েছে।
“তাই আমাদের উচিত নিজেদেরকে এর জন্য প্রস্তুত করা এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার নিষিদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।”