ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
চান্দিনা
২৪ ডাকাতির ঘটনায় মামলা নেই!
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিশেষ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে-পুলিশ সুপার
Published : Sunday, 3 July, 2022 at 12:00 AM, Update: 03.07.2022 1:33:17 AM
২৪ ডাকাতির ঘটনায় মামলা নেই!রণবীর ঘোষ কিংকর ||
কুমিল্লার চান্দিনায় ২৪টি সড়ক, মহাসড়ক ও গৃহডাকাতির ঘটনায় থানায় মামলা হয়নি একটিও!  ডাকাতির পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শনের পাশাপাশি ভূক্তভোগীদের মামলা দায়েরে নিরুৎসাহিত করায় কেউ মামলা করতে সাহস পাচ্ছে না কেউ।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী গত এক মাসে ১৩ জন ডাকাতকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। ওইসব ডাকাতদের কাউকেই ২৪টি ডাকাতির ঘটনায় আটক দেখায়নি। ওইসব ডাকাতদের পেন্ডিং (পুরাতন) মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। যারফলে ডাকতরা খুব দ্রুত জামিনে মুক্তি পায়। এমনকি তাদের মধ্যে অনেকেই গ্রেফতারী পরোয়ানা ভূক্ত আসামী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধুমাত্র জুন মাসে চান্দিনা থানা এলাকায় ১৪টি গৃহডাকাতি, ৩টি সড়ক ডাকাতি ও ৭টি মহাসড়ক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওইসব ঘটনায় থানায় একটি মামলাও দায়ের হয়নি! এমনকি ওইসব ঘটনার সাথে জড়িত ডাকাতচক্রকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এছাড়াও ডাকাতির ঘটনায় ভূক্তভোগীদের লুন্ঠিত মালামালও উদ্ধারে কার্যত কোন ভূমিকা নেই পুলিশের। এসব ঘটনায় পুলিশের দায়িত্ব অবহেলাকেই দোষছেন সাধারণ মানুষ।
এদিকে গৃহডাকাতির পর ভূক্তভোগীরা থানা পুলিশকে অবহিত করলেও ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনার পর ভূক্তভোগীরা প্রাণ ভয়ে নিরবেই স্থান ত্যাগ করেন। যে কারণে মহাসড়কে ডাকাতির সব ঘটনা থানা পর্যন্ত পৌঁছায় না।
১৪টি গৃহডাকাতির ঘটনায় পুলিশ ২টি মামলার দায়ের করার কথা স্বীকার করলেও মামলা দুইটির সঠিক কোন তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। এর মধ্যে গত ২৪ জুন মহাসড়কের হাড়িখোলা এলাকায় সন্দেহ ভাজন দুই ডাকাতকে আটক করার পর তাদেরকে ডাকাতির প্রস্তুতি মামলায় আদালতে পাঠানো হয়। কিন্তু উপজেলার গোবিন্দপুর, হারং, কুটুম্বপুর, মীরগঞ্জ, এতবারপুর, মাইজখার, কামারখোলা ও হাড়িপাড়া গ্রামে গত এক মাসে ১৪টি পরিবারে ডাকাতির ঘটনায় একটি মামলাও দায়ের হয়নি। এছাড়াও হারং উদালিয়া ব্রীজ এলাকায় ৩টি সড়ক ডাকাতি ও মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার হাড়িখোলা, তীরচর ও কুটুম্বপুর এলাকায় রড ছুড়ে ৭টি গাড়িতে ডাকাতির ঘটনায়ও কোন মামলা হয়নি।
কামারখোলা গ্রামের ইমাম হোসেন জানান, আমার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনার পর চান্দিনা থানা পুলিশ এসে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর আমাকে মামলা না করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, মামলা করলে ডাকাতদল গা ঢাকা দিবে, আমরা তাদেরকে ধরতে পারবো না। তার চেয়ে ভাল আপনারা নিরব থাকেন তাহলে আমরা সুন্দর ভাবে কাজগুলো চালিয়ে যেতে পারবো এবং আসামী ধরা সহজ হবে।
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান জানান, ‘গত এক মাসে ১৩জন ডাকাতকে আটক করি’। তাদেরকে কোন মামলায় চালান দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ‘আমি এ থানায় যোগদানের পর বৈদ্যুতিক ক্যাবল শো রোমে ডাকাতি ও হাড়িখোলায় মহাসড়ক ডাকাতির প্রস্তুতি মামলায় তাদেরকে চালান করা হয়েছে।’ ২৪টি ডাকাতির ঘটনায় কোন মামলা হয়েছি কিনা এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ওইসব ঘটনায় মামলা হয়নি।’ কেন হয়নি? এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
এতোগুলো ডাকাতির ঘটনায় মামলা হয়নি জেনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ। তিনি কুমিল্লার কাগজকে জানান, কোন কোন এলাকায় ডাকাতি হয়েছে সেগুলো খতিয়ে দেখতে হবে। এবং কি কারণে মামলা হয়নি সেই বিষয়টিও জানতে হবে। এজন্য একজন বিশেষ কর্মকর্তাকে চান্দিনার বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য নিয়োগ করা হচ্ছে।