রণবীর ঘোষ কিংকর।
ত্যাগের
মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদ-উল আযাহার আর মাত্র তিন দিন বাকি। পশু কোরবানির
মধ্য দিয়ে পালিত হওয়া ঈদ-উল আযাহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে স্থায়ী ও অস্থায়ী
পশুর হাট-বাজার গুলো। গ্রামাঞ্চলের মানুষ এরই মধ্যে পছন্দের পশু কিনতে
শুরু করলেও শহরাঞ্চলের মানুষগুলো বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দর-দাম যাচাই
করছেন। যে কারণে প্রতিটি পশুর হাট-বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ব্যাপক সমাগম
দেখা যায়।
কুমিল্লার চান্দিনায় পশুর হাট ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা,
নির্বিঘ্নে যাতায়াত, জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিনসহ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে
উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট বাজার কর্তৃপক্ষ। পশুর হাটে ক্রেতা
সমাগম করতে প্রচার-প্রসারণা চালাচ্ছে ইজারাদাররা। মাইকিং এর প্রতিযোগিতা
চলছে আনাচে কানাচে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার আশ্বাস দিয়ে
যার যার মত করে বাজার মাতানোর চেষ্টা করছে বাজার কর্তৃপক্ষ।
কুমিল্লার
চান্দিনা উপজেলা সদরের ছায়কোট গরু বাজারটি আশ-পাশের কয়েকটি উপজেলার মধ্যে
সর্ব বৃহৎ গরু বাজার। পশু বেচাকেনায় ব্যস্ত অধিকাংশ মানুষ।
মঙ্গলবার (৫
জুলাই) চান্দিনা পৌরসভার ছায়কোট গরু বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,
প্রচুর সংখ্যক কোরবানির পশু বাজারে প্রবেশ করেছে। ঈদের আরও সপ্তাহ খানেক
বাকি থাকলেও পশু বিক্রি হয়েছে চোখে পড়ার মতো। আবার অনেক ক্রেতারা মঙ্গলবার
গরু না কিনলেও বাজার ঘুরে দরদাম করছেন। বিভিন্ন আকারের গরুর মধ্যে ছোট ও
মাঝারী আকারের গরুর চাহিদাই বেশি দেখা গেছে।
বাজারে আসা ক্রেতা সিরাজুল
ইসলাম জানান, ৭০ হাজার টাকার থেকে শুরু করে ৫-৭ লাখ টাকা মূল্যের গরু
বাজারে রয়েছে। তবে দেড় লাখ টাকার নিচের গরুর চাহিদা বেশি থাকায় বিক্রেতারা
দামও হাঁকাচ্ছেন অনেক বেশি। আবার দেড় লাখ টাকার উপরের গরুর দাম মোটামুটি
ঠিক আছে। তাই ঘুরে দেখছি পছন্দ হলে কিনে নিব।
গরু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন
জানান, আমি এক লাখ টাকা থেকে শুরু করে আড়াই লাখ টাকা মূল্যের ২৫টি গরু
বাজারে এনেছি। গ্রামের মানুষ অনেকেই বাড়িতে গরু কিনে ফেলে। আর শহরাঞ্চলের
মানুষ গরু রাখার জায়গা না থাকায় ঈদের ২/১ দিন আগে গরু কিনে। তাই এখনও
ঠিকমতা বেচা বিক্রি শুরু হয়নি। বাজারে মানুষ বেশি থাকলেও ঘুরে ঘুরে দর-দাম
করা মানুষের সংখ্যাই বেশি।
ছোট ও মাঝারি আকৃতির গরুর দাম বেশি কেন এমন
প্রশ্নে তিনি বলেন, গ্রামের মানুষ ১ লাখ টাকা মূল্যে গরু ৪/৫জনে শরিকে
কোনরবানি দেয়, এর বেশি দামে গরু কোরবানী দেওয়ার সংখ্যা অনেক কম। ছোট ও
মাঝারী সাইজের গরুর চাহিদা বেশি থাকায় দামও একটু বেশি। শুক্রবার ও শনিবার
ঈদের ছুটি নিয়ে মানুষ বাড়িতে আসবেন এবং ঈদেরও পূর্ব মুহুর্তে সব বাজারেই
বেচা-কেনা বাড়বে বলে মনে করেন ওই ব্যবসায়ী।
ইজারাদার হাজী মো. শামীম
হোসেন এর তথ্যানুসারে জানাযায়, এবার পশুর দাম মোটামুটি ক্রেতাদের ক্রয়
ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। গত শনিবার ছায়কোট বাজারে প্রায় ৬ শতাধিক কোরবানীর পশু
বিক্রি হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) সেটি দ্বিগুন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এব্যাপারে
চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন,
‘ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ ও বাজার কমিটির
স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে পৃথক টিম গঠন করা হবে। স্থায়ী বাজারগুলোতে জালনোট
শনাক্ত করণ মেশিন বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নির্বিঘ্নে ক্রয়-বিক্রয়
করার যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’