জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে স্থানীয় এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যে হাতাহাতি ঘটনার মীমাংসার পর স্বস্তি ফিরেছে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে। ওই ঘটনায় দুই নেতার পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করলেও সমঝোতার পর উভয়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোন উত্তেজনা নেই। এরই মধ্যে আগামী ২ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নেতা-কর্মীরা। এর আগে গত রবিবার বিকাল ৪টায় ধানমন্ডির সভানেত্রীর কার্যালয়ে সমঝোতা বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, চট্টগ্রামের বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ম.রহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টারসহ উত্তর জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীর। তাঁদের উপস্থিতিতে উভয়ের মধ্যে চলমান দ্বন্ধ নিরসন হয়। একই বৈঠকে আগামী ২ সেপ্টেম্বর-২২ দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এদিকে, দুই নেতার মধ্যে মীমাংসা হওয়ায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা অনেক আনন্দিত। এই দুই নেতার সমন্বয়ে আওয়ামীলীগ আরও উজ্জীবিত হবে বলে আশা করছেন তাঁরা। এছাড়াও দীর্ঘ ২৭ বছর পর আগামী ২ সেপ্টেম্বর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্মেলনের মাধ্যমে দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামীলীগ নতুন নেতৃত্ব পাবে।
দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ওমানী ও যুবলীগ নেতা প্রভাষক সাইফুল ইসলাম শামীম বলেন, দুই নেতার মধ্যে সমঝোতা হওয়ায় আমরা খুশি। দেবিদ্বারে আওয়ামীলীগ তিলে তিলে শ্রম ত্যাগের বিনিময়ে আজকের এ অবস্থানে এসেছে। বর্তমান সংসদ রাজী ফখরুলের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ এ উপজেলায় সুসংগঠিত ও শক্ত অবস্থানে রয়েছে। দেবিদ্বারের সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ এর সমন্বয়ে দেবিদ্বারে আওয়ামীলীগ আরও সুসংগঠিত হবে বলে মনে করছি।
দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম মনিরুজ্জামান মাস্টার বলেছেন, দেবিদ্বার আওয়ামীলীগের প্রায় ২৭ বছর কমিটি নেই। সামনে সম্মেলনে নতুন কমিটি হবে। এরই মধ্যে নেতা-কর্মীরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। নিজেদের মধ্যে দ্বন্ধ সংঘাত থাকলে দল প্রশ্নবিদ্ধ হয়। দুই নেতার মধ্যে দ্বন্ধ নিরসন হয়েছে। এখন আমাদে;র সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার বলেন, দুই নেতার মধ্যে বিরোধ মীমাংসা করা হয়েছে। তবে এলডি হলে ঘটে যাওয়া ঘটনায় কে দোষী তা ভিডিও ফুটেজ বের করার জন্য ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটিকে আগামী ১৫দিনের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিতে বলেছেন।
প্রসঙ্গত, জাতীয় সংসদের মেম্বারস ক্লাবে গত ১৬ জুন কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভায় সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় অবশেষে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে মীমাংসা হয়েছে।