ব্যক্তি নয় জাতির স্বার্থে কাজ করার আহ্বান স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর
Published : Saturday, 6 August, 2022 at 12:00 AM
দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের তরে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর অডিটোরিয়ামে শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘পুরো জাতির উন্নয়ন না করে শুধু ব্যক্তির উন্নয়ন করে দেশকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নেওয়া যাবে না। সবার আগে আমরা এ দেশের নাগরিক। অন্যান্য দেশে ব্যক্তি নয়, দেশের উন্নয়ন দিয়ে সার্বিক উন্নয়ন পরিমাপ করা হয়। এমন কিছু করা যাবে না, যাতে আগামী প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
তাজুল ইসলাম, ‘একসময় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ মুছে ফেলা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যারা জীবন বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন, তাদের তিরস্কার করা হয়েছে। স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক তৈরির পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান দিয়ে নানা সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।’
ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে গোটা জাতিকে বিভক্তি করার চেষ্টা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জয় বাংলা স্বাধীনতার স্লোগান। বাংলাদেশের জন্মের স্লোগান। এই স্লোগানকে অস্বীকার করার কোনও সুযোগ নেই। যারা বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে অস্বীকার করে, জয় বাংলা বুকে ধারণ করে না; এই গোষ্ঠী দেশের স্বাধীনতাকে কখনোই মনেপ্রাণে মেনে নেবে না—এটাই স্বাভাবিক। এরাই দেশে বসে স্বাধীনতার বিরোধিতা করে। যারা দেশে অরাজকতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করবে তাদের তো স্যালুট দেওয়া যাবে না। তাদের সঙ্গে কখনও বন্ধুত্ব হতে পারে না।’
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘এ দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য জাতির পিতা সারা জীবন লড়াই-সংগ্রাম ও আন্দোলন করেছেন। বঙ্গবন্ধু মানুষকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসতেন। তার চিন্তা-চেতনায় ছিল মানুষের কল্যাণ করা। একইভাবে তার সন্তানরাও সেই মানসিকতা নিয়ে বড় হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এবং কার্যক্রম তা প্রমাণ করে। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের কাছে বাঙালি জাতি আজীবন কৃতজ্ঞ।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা এ দেশের মানুষের ভাগ্যের কোনও পরিবর্তন করতে পারেনি। দেশকে ভিক্ষুক আর মিসকিনের জাতিতে রূপান্তরিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে দেশকে দারিদ্রের কষাঘাত থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম হয়েছেন। সব খাতে আজ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল বহু প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের আধুনিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পথিকৃৎ।’ নতুন প্রজন্মের কাছে শেখ কামাল অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন বলেও জানান মন্ত্রী।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য। এছাড়া এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ মহসীন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ ও এর আওতাধীন বিভিন্ন দফতর/সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, সকালে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বঙ্গবন্ধুসহ সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন।