দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে চট্টগ্রামে চলছে না ডিজেল চালিত গণপরিবহন। শুক্রবার রাতে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির পরে চট্টগ্রামে ডিজেল চালিত গণপরিবহন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন পরিবহন মালিকরা। এতে সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। তবে সিএনজিচালিত গণপরিবহন চলাচল করাতে যাত্রীদের কিছু সড়কে ভোগান্তির চিত্র চোখে পড়েনি। পাশাপাশি শনিবার সরকারি অফিস আদালত বন্ধ থাকার কারণে বড় দুর্ভোগে পড়তে হয়নি গন্তব্যে যাতায়াতকারীদের। তবে রোববার অফিস আদালত খোলার দিন এ ভোগান্তি চরমে পৌঁছবে বলে মনে করছেন অনেকে।
কোতোয়ালী মোড়ে ৩নং রুটের একটি হিউম্যান হলারের হেলপার কামাল উদ্দিন বলেন, আমাদের গাড়িগুলো সিএনজি চালিত। আমরা আগের হিসেবে ভাড়া নিচ্ছি। ডিজেলের গাড়িগুলো ভাড়া বেশি নিচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের অর্থ সম্পাদক মো. কলিমুল্লাহ বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী বাসগুলোর বেশিরভাগ ডিজেল চালিত। ডিজেল চালিত সব বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে ১নং ও ৩নং রুটে বেশিরভাগ হিউম্যান হলার চলে। এগুলো গ্যাসচালিত। কিন্তু ৪নং, ৬ নং, ৭নং, ১০নং রুটের বেশিরভাগ বাস ডিজেলচালিত এসব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার হঠাৎ করে ডিজেলের দাম বাড়িয়েছেন। প্রতি লিটার ডিজেলে দাম বেড়েছে ৩৪ টাকা। আগের ভাড়া গাড়ি চালাতে গেলে নিজের পকেটের টাকা রাস্তায় দিয়ে আসতে হবে। চালক-হেলপারও বেতন পাবেন না। তাই গাড়ি রাস্তায় না নামানো ভালো।
এদিকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে চলাচলকারী ১০নং রুটের বাসগুলো বন্ধ থাকাতে অনেকে দুর্ভোগে পড়েছেন। বাস বন্ধ থাকায় বিকল্প কোন পরিবহন না পেয়ে সিএনজি অটোরিকশায় চড়তে হয়েছে অনেক যাত্রীদের।
বহদ্দারহাট এলাকায় কথা হলে সজিব দে নামের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, আগে বাসে ২০ টাকায় আগ্রাবাদ যেতাম। আজকে বাস না পেয়ে বাধ্য হয়ে সিএনজি অটোরিকশা নিয়েছি। আগে ১২০ টাকায় আগ্রাবাদ গেলেও আজকে ১৭০ টাকা দিতে হয়েছে। বাস রাস্তায় না থাকায় সিএনজি অটোরিকশাগুলো সুযোগ নিচ্ছে। আজকে সরকারি অফিস আদালত বন্ধ। কালকে (রোববার) অফিস আদালত খুললে রাস্তা অরাজকতা শুরু হবে।
এদিকে ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর থেকে দূরপাল্লার আন্তঃজেলা বাস চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে। জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব গোলাম রসুল বাবুল বলেন, ‘ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পর কোন ঘোষণা আমরা দেইনি। তবে এরপর থেকে ডিজেল চালিত গণ ও পণ্য সব ধরণের পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।’
শুক্রবার (৫ আগস্ট) দিনগত রাত ১২টা থেকে ভোক্তা পর্যায়ে লিটারপ্রতি ডিজেল ও কেরোসিন ৮০ টাকা থেকে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, পেট্রোল ৮৪ টাকা থেকে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টা এবং অকটেন ৮৯ টাকা থেকে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। এর আগে ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর সর্বশেষ জ্বালানির দাম বাড়ানো হয়। তখন ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়। ৮ মাসের ব্যবধানে আবার বাড়ানো হলো তেলের দাম।