চা শ্রমিকরা সবসময় নৌকা মার্কায় ভোট দেন বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, কিছুদিন আগে আন্দোলন হয়েছে। আমি সেই সময় মালিকদের সঙ্গে বসে আপনাদের দৈনিক মজুরি ও অন্যান্য সুবিধা নির্ধারণ করে দিয়েছি। আমার মনে হয় সেখানে আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী করতে পেরেছি।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে চা শ্রমিকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট ও চট্টগ্রামে চা শ্রমিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন।
চা শ্রমিকদের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু চা শিল্পকে জাতীয়করণ করেননি। বরং নানাভাবে প্রণোদনা দিয়েছেন, যাতে এই শিল্পটা ভালোভাবে গড়ে উঠতে পারে। জাতির পিতা চা শ্রমিকদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দেন। তাদের ভোটাধিকারও দেওয়া হয়। চা শিল্পের উন্নতির জন্য বিশেষ ভর্তুকির ব্যবস্থা করেন। বিনামূল্যে বাসভবন, সুপেয় পানি, রেশন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এক সময় চা শ্রমিকদের অন্যভাবে ব্যবহার করা হতো। বঙ্গবন্ধুর পদক্ষেপের ফলে তারা অধিকার ফিরে পায়।
সরকার চা শ্রমিকদের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, চা শ্রমিকরা আমাদের দেশেরই নাগরিক। কিন্তু এক সময় তাদের নাগরিকত্ব ছিল না। ঘরবাড়ি ছিল না। যেহেতু চা শ্রমিকরা সবসময় নৌকা মার্কায় ভোট দেন, সেহেতু আমরা চেষ্টা করেছি আপনাদের সমস্যাগুলো দূর করতে।
সাম্প্রতিক আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আন্দোলন হয়েছে। আমি সেই সময় মালিকদের সঙ্গে বসে আপনাদের দৈনিক মজুরি ও অন্যান্য সুবিধা নির্ধারণ করি। আমার মনে হয় সেখানে আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী করতে পেরেছি।
চা-শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ব্রিটিশরা আপনাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ে এসেছিল। তখন আপনাদের কোনও নাগরিক অধিকার ছিল না। কোনও সুযোগ-সুবিধা ছিল না। আজ আপনারা এদেশের নাগরিক। বঙ্গবন্ধু আপনাদের নাগরিকত্ব দিয়েছেন। তার কন্যা হিসেবে আপনাদের প্রতি আমার একটি দায়িত্ব রয়েছে। আমি চেষ্টা করি সবসময় এই দায়িত্বটা যথাযথভাবে পালন করতে। মালিকরা যাতে আপনাদের যথাযথভাবে মর্যাদা দেয় ও দেখে সেই উদ্যোগ নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চা শিল্প আমাদের দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। চা বাগান দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি এই চা শিল্প আমাদের অর্থখাতের জন্যও ভীষণ দরকারি। তাই এই চা শিল্প যেন ধ্বংস হয়ে না যায় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য আমি আমার সব চা শ্রমিক ভাইদেরও অনুরোধ জানাবো এই চা শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য।
ইতোপূর্বে চা-শ্রমিকদের দেওয়া স্বর্ণের চুড়ি উপহার পাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা গণভবনে আমার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় উপহার নিয়ে এসেছিলেন। সেই উপহার এখনও আমি হাতে পরে বসে আছি। আমি কিন্তু ভুলিনি। আমার কাছে এটা হচ্ছে সব থেকে অমূল্য সম্পদ। চা-শ্রমিক ভায়েরা চার আনা আট আনা করে জমিয়ে আমাকে এই উপহার দিয়েছেন। এত বড় সম্মান, এতবড় উপহার আমি আর কখনও পাইনি।