Published : Saturday, 17 September, 2022 at 12:00 AM, Update: 17.09.2022 12:19:35 AM
তানভীর দিপু:
করোনার
মন্দা কাটিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রপ্তানিতে আবারো সরূপে ফিরে
এসেছে কুমিল্লা জেলা। ২০২২ সালের আগষ্ট পর্যন্ত এই জেলা থেকে পৃথিবীর
বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে গিয়েছেন অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। এর
মধ্যে নারীদের সংখ্যা অন্তত ১২ শতাংশ। তবে প্রবাসে দিন দিন দক্ষ জনশক্তির
চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণের দক্ষতা
বৃদ্ধিতে সচেতনতা অভিযান পরিচালনা করছে জেলা শ্রম ও জনশক্তি রপ্তানি
কার্যালয়।
জেলা শ্রম ও জনশক্তি রপ্তানি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,
কুমিল্লা জেলা থেকে এবছরের আগষ্ট মাস পর্যন্ত জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে ৫০
হাজারেরও বেশি। ২০২১ সালে রপ্তানি হয়েছে ৬৮ হাজার ১৬৭ জন, ২০২০ সালে ২৪
হাজার ১৮৯ জন ও ২০১৯ সালে ৬৫ হাজার ৯৪১ জন। কার্যালয়ের প্রধান জানান,
প্রতিবছর কুমিল্লা জেলা থেকে ১৩শ’ থেকে ১৪শ’ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ প্রতিমাসে
এই জেলার প্রবাসীরা ১শ’ মিলিয়ন ডলার। কুমিল্লার বেশির ভাগ প্রাবসীরা
চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম, দাউদকান্দি ও সদর উপজেলার। এছাড়া অন্যান্য উপজেলার
প্রবাসীরাও উল্লেখযোগ্য পরিমানে বৈদেশিকমূদ্রা পাঠিয়ে থাকেন।
’এদিকে
বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা মহামারির কারণ অর্থনৈতিক সংকটের
কারণে বিদেশগামীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে কম বয়সী এবং অদক্ষরাও প্রায়োজনীয় অর্থ
সংগ্রহ করে বিদেশে ছুঁটছেন কাজের আশায়। বেশি আয়ের আশায় ধার কর্জ করে হলেও
বিদেশ গিয়ে কাজের সন্ধানে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। কেউ কেউ মাধ্যমিকে
থাকতেই পড়াশুনা ছেড়ে দিয়েই সুযোগ পেলে চলে যাচ্ছেন বিদেশে।
জেলা শ্রম ও
জনশক্তি রপ্তানি কার্যালয়ের প্রধান দেবব্রত ঘোষ বলেন, পড়াশুনা কিংবা
প্রশিক্ষণ ছাড়া এই সময়ে এসে প্রবাসে গমণ করে লাভবান হবার সুযোগ কম। পৃথিবীর
সব দেশই এখন দক্ষতার মূল্যায়ন করে। অদক্ষ লোকদের কেউই এখন আর চাচ্ছে না।
তাই এখন যেসবই জনশক্তি আমদানি করবে তারা আগে দক্ষতাকে প্রাধাণ্য দিবে। তাই
বাংলাদেশ থেকে উপার্জনের উদ্দেশ্যে বিদেশ যেতে চাইলে আগে প্রশিক্ষিত হওয়া
জরুরী।
কুমিল্লা জেলা থেকে উপার্জনের উদ্দেশ্যে বিদেশগামীদের বেশির
ভাগই মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে থাকেন। সেখানে তারা নির্মান
কাজ, সেবাধর্মী এবং ব্যবসায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। তবে দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণ
না থাকায় অনেকেই অবৈধ পথে বিদেশ যাবার চেষ্টা করে অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতির
শিকার হন। বিভিন্ন সময় খবরে আসে, নারী প্রবাসীরা কর্মক্ষেত্রে নিযাতনের
শিকার হবার তথ্য।
কুমিল্লা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী
পরিচালক দেবব্রত ঘোষ জানান, অভিবাসন প্রক্রিয়ায় নারী অভিবাসন একটি
গুরুত্বপূর্ন সংযোজন। তিনি নিরাপদ, নিয়মিত, সুশৃঙ্খল এবং দায়িত্বশীল
অভিবাসন নিশ্চিতকরণ, মানব পাচার রোধ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রক্রিয়ায়
মধ্যসত্বভোগীদের দৌরাত্ব নিরসন, উচ্চ অভিবাসন ব্যয় হ্রাস, অভিবাসী কর্মীর
অধিকার সুরক্ষা, অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তা এবং কল্যাণ
নিশ্চিতকরণে বর্তমান সরকারের সচেষ্ট রয়েছে।জেনে বুঝে, প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ
হয়ে বিদেশ গেলে, অর্থ-সম্মান দুটোই পাওয়া যাবে। মিথ্যা তথ্যের উপর নির্ভর
করে বা অন্যের প্রলোভনে বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত না নেওয়া উচিত।