Published : Friday, 23 September, 2022 at 12:00 AM, Update: 23.09.2022 1:39:14 AM
মো. হাবিবুর রহমান, মুরাদনগর ||
কুমিল্লার মুরাদনগরে বিবস্ত্র করে মারধরের ভিডিও ধারণকারী জাকির হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূক্তভোগী এক নারী। একই সঙ্গে বিচার না পেলে আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না বলেও জানাড ভুক্তভোগী ওই নারী। সংবাদ সম্মেলন করার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে জাকিরের লোকজন ওই নারীর ছোট ভাই কামরুলকে ছুরিকাঘাতে আহত করারও অভিযোগ রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন চাপিতলায় নিজ বাড়ীতে ভুক্তভোগী ওই নারী সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টম্বর) রাত দেড়টার সময় মুখোশধারী কয়েকজন লোক ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করতে চাইলে আমি ও আমার মা বাধাঁ দেই। এক পর্যায়ে ঘরের দক্ষিণ পাশ দিয়ে সিঁদ কেটে কয়েকজন ঘরে ঢুকে আমাকেসহ আমার মা ও ছোট ভাইয়ের হাত, মুখ কস্টেপ দিয়ে বেঁধে ফেলে। পরে তারা দরজা খুলে দিলে একে একে ১২ জন ঘরে প্রবেশ করে। সেখানে থাকা এক জনের মুখের মাক্স খুলে গেলে আমি লক্ষ করে দেখি সে আমার ননাশের জামাই জাকির হোসেন। সে আমাকে টেনে হেঁচড়ে পাশের রুমে নিয়ে গিয়ে পড়নে থাকা জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করতে থাকে। আর আমাকে বলে এই কথা যদি কারোর কাছে বলছ তাহলে ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিব। তখন তর আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। এসময় আমাকে বিবস্ত্র অবস্থায় জাকির পেটে স্বজোরে লাথি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে চিৎকার করতে থাকলে তারা সেখান থেকে চলে যায়। যাওয়ার আগে আলমারিতে থাকা নগদ ১২ হাজার টাকা, আমার ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন ও একটি পাসপোর্ট নিয়ে যায়।
ওই রাতেই আমার মাকে গুরুতর অবস্থায় মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। পরদিন শুক্রবার সকালে ৯৯৯ নম্বারে ফোন করে বিষয়টি জানানো হলে তারা বাঙ্গরা বাজার থানার নাম্বার দিয়ে সেখানে যোগাযোগ করতে বলেন। তাৎক্ষণিক বিষয়টি বাঙ্গরা বাজার থানায় জানানো হয়। শুক্রবার সারাদিনেও পুলিশ না আসায় বিকাল ৫টার দিকে বাঙ্গরা বাজার থানায় গিয়ে আমার বাবা একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। আমি আমার নগ্ন ভিডিও ধারণকারী জাকির হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই এবং আমার জীবনের নিরাপত্তা চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জাকির হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। ফোনে ক্ষুদে বার্তা দিয়েও কোন সাড়া মিলছে না। তার পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, সে বিদেশে চলে গেছে।
ঘটনা সম্পর্কে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও এস আই ওমর ফারুক দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে জানান, বাদীর পক্ষ থেকে আমি কোন টাকা পয়সা নেই নাই। অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
বাঙ্গরা বাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) দীনেশ চন্দ্র দাস গুপ্ত দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। হয়ত ওসি স্যার জানতে পারেন। তারপরও খোঁজ-খবর নিয়ে দেখব।