পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় পঞ্চম দিনের মতো নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোর ৫টা থেকে অভিযান শুরু হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বেলা ১১টা) নৌকাডুবিতে নিখোঁজ কাউকে উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়নি।
নৌকাডুবির ঘটনায় সর্বশেষ বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল পর্যন্ত ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের জরুরি তথ্য কেন্দ্রের তথ্য মতে, ৬৯ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে ঠিক কতজন যাত্রী ছিল, তার সঠিক তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে এখনো তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে নৌকাডুবিতে ৬৯ জনের মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে মাতম চলছে। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাটের বাতাস। লাশের খোঁজে মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদের জরুরি তথ্য কেন্দ্রে ভিড় করছেন নিখোঁজদের স্বজনরা।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর কুমার রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে আরও তিনজন। আজ ভোর ৫টা থেকে পঞ্চম দিনের মতো অভিযান শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে উদ্ধার করা যায়নি। একজন মানুষ নিখোঁজ থাকলেও আমাদের উদ্ধার কাজ অব্যাহত থাকবে।
গত রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাট এলাকায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন ২৫ জন, দ্বিতীয় দিন ২৬ জন, তৃতীয় দিন ১৭ ও চতুর্থ দিন একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর অপরপাড়ে বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া পূজা উপলক্ষে ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। ওই ধর্মসভায় যোগ দিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নৌকা যোগে নদী পার হচ্ছিলেন। তবে ৫০ থেকে ৬০ জনের ধারণক্ষমতার নৌকাটিতে শতাধিক যাত্রী ছিলেন। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে নদীর মাঝপথে নৌকাটি ডুবে যায়। কয়েকজন সাঁতরে তীরে আসতে পারলেও অধিকাংশই পানিতে ডুবে যায়।
মৃত ৬৯ জনের মধ্যে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ৪৫ জন, দেবীগঞ্জের ১৮ জন, আটোয়ারীর ২ জন, ঠাকুরগাঁওয়ের ৩ জন ও পঞ্চগড় সদরের ১ জন রয়েছেন। মৃত ৬৮ জনের মধ্যে নারী ৩০ জন এবং পুরুষ ১৮ জন। বাকি ২১ জন শিশু।