ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
একজন কাউন্সিলরও যদি বলে আমাকে চায় না, আমি থাকব না : শেখ হাসিনা
Published : Friday, 7 October, 2022 at 12:00 AM, Update: 07.10.2022 1:05:51 AM
একজন কাউন্সিলরও যদি বলে আমাকে চায় না, আমি থাকব না : শেখ হাসিনাপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের আগামী সম্মেলনে একজন কাউন্সিরও যদি তাকে দলের নেতৃত্বে দেখতে না চান, তাহলে তিনি বিদায় নিতে প্রস্তুত আছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন টানা চার দশক ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে আসা শেখ হাসিনা।
গত দুটি সম্মেলনের আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি নিজেই তার বয়সের কথা তুলে ধরে বলেছিলেন, নতুন নেতৃত্বের হাতে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে পারলে তিনি খুশি হবেন। তবে প্রতিবার সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকন্যাকেই নেতৃত্বে রেখেছেন নেতাকর্মীরা।
সে বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে ওই সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, এবার কোনো চমক সম্মেলনে থাকবেন কি না, শেখ হাসিনা কোনো নতুন নেতৃত্বকে সামনে নিয়ে আসবেন কি না।
উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, “আওয়ামী লীগের একটি কাউন্সিলর যদি বলে যে, আমাকে চায় না, আমি কোনদিনই থাকব না। যেদিন থেকে আমাকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট করেছিল, সেদিন থেকেই এই শর্তটা মেনে যাচ্ছি।"
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সেনাবাহিনীর একদল সদস্য যখন সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করে, তখন স্বামীর কর্মসূত্রে ইউরোপে ছিলেন শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে থাকা ছোট বোন শেখ রেহানাও প্রাণে বেঁচে যান।
এরপর ছয় বছর নির্বাসনে কাটাতে হয় শেখ হাসিনাকে। ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার অনুপস্থিতিতেই আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তাকে দলীয় সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
সভাপতি হয়ে দেশে ফিরে জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ সালে তিনি দলকে ক্ষমতায় ফেরান।
এরপর ২০০৮ সালে আবারও নির্বাচিত হয়ে টানা তিন মেয়াদ ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের শাসক।
৪১ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকা শেখ হাসিনা আগেও দলকে নতুন নেতৃত্ব খুঁজে নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন হবে বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, “এটা ঠিক, দীর্ঘদিন হয়ে গেছে। অবশ্যই আমি চাই নতুন নেতৃত্ব আসুক।”
নেতৃত্ব কাউন্সিলররা নির্বাচন করেন এবং কাউন্সিলরদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “আমার তো আসলে সময় হয়ে গেছে। আমার যেটা লক্ষ্য ছিল, জাতির পিতা বাংলাদেশ স্বাধীন করে একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে আর্থ সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অগ্রগতি করে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা অর্জন করে দিয়ে যান। জাতিসংঘই স্বল্পোন্নত দেশের স্বীকৃতি দিয়েছিল।
“এরপর দেশে হত্যা-ষড়যন্ত্রের রাজনীতি চলেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ক্ষমতা ছিল বন্দিখানায়। গণতন্ত্র ছিল না, তার পরিবর্তে ছিল মার্শাল ল বা মিলিটারি শাসক। এবং সেখানে কার্ফু গণতন্ত্র ইত্যাদি ইত্যাদি ছিল। অনেক চড়াই-উৎরাই পাপর করে আমরা গণতন্ত্র উদ্ধার করি।”
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “একটানা তিনবার, অর্থাৎ ২০০৮ এর নির্বাচন থেকে শুরু করে ২০২২ সালের নির্বাচন পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতহাসে এই প্রথম একটানা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। এর মাঝে অনেক খুন-খারাপি অগ্নি সংযোগ– নানা কিছু ঘটেছে। তারপরেও কিন্তু আমরা ক্ষমতায় একটানা ছিলাম বলে আজকে উন্নয়নশীল দেশে আমরা উন্নীত হয়েছি। আমার তো লক্ষ্য ছিলৃ ২০২০ এ জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এখন বিদায় নেয়ার জন্য আমি প্রস্তুত।”
যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ দিনের সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে তা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।