অনির্দিষ্টকালের জন্য আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণার ছয়দিন পর রোববার (৯ অক্টোবর) খুলছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আবাসিক হল।
শনিবার (৮ অক্টোবর) সকাল ১১টায় জরুরি এক ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও প্রভোস্ট সভায় অংশ নেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে হল খুলে দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মিটিং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার (৯ অক্টোবর) বেলা ১২টায় হল খুলে দেওয়া হবে। শুধুমাত্র আবাসিক শিক্ষার্থীরাই হলে উঠতে পারবে। তবে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে হল প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিবে। এছাড়া পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১০ অক্টোবর থেকে ১৭ অক্টোবর পরীক্ষা স্থগিত থাকবে।
হলে শিক্ষার্থী তোলার ক্ষেত্রে আবাসিকতা দেখা হবে জানিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোকাদ্দেস-উল ইসলাম বলেন, যাদের আবাসিকতা নেই, তবে হলে থাকে, তারা হলের অফিস থেকে আবাসিকতার ফর্ম নিয়ে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে হলে উঠবে। আবাসিকতার পরিচয়পত্র করার জন্য আমরা দেড় মাস সময় দেব।
নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলের প্রাধ্যক্ষ মো. জিল্লুর রহমান বলেন, হলে থাকা শিক্ষার্থী যাদের আবাসিকতা নেই, তাদেরকে সাময়িক পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। আবাসিকতার জন্য ফরম পূরণ করে হলে উঠতে হবে। সেক্ষেত্রে ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে।
এদিকে হল খুলে দিলেও নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ। তিনি বলেন, হল খোলার সিদ্বান্তকে সাধুবাদ জানাই। পরীক্ষাগুলোও দ্রুত চালু করা দরকার। তবে প্রশাসন সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে কি না আমি জানি না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে কথা বলে বহিরাগত ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকে, তাহলে তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। যদি এসব নিশ্চিত না করে শুধু শিক্ষার্থীদেরকে মার খাওয়ানোর জন্য হল খুলে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে এসব প্রশাসনের পাতানো খেলা।
ছাত্রলীগের সংঘর্ষের আরেক পক্ষের নেতা সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহী বলেন, সামনে যেহেতু ক্লাস পরীক্ষা আছে অবশ্যই হল খোলা লাগবে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ যেহেতু সিদ্বান্ত দিছে এখনও কমিটি বহাল থাকবে। সেহেতু বর্তমান কমিটির যারা হল চালায়, তারা সুন্দরভাবে হল চালাক।
এ দিকে হল খুলে দিলেও পরীক্ষা স্থগিত রাখার বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন যাতে কোনোভাবে ব্যাহত না হয়, আমরা সে বিষয়ে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। যে কাজটি তাঁদের জন্য মঙ্গলজনক হবে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেটিই করবে।
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ৩০ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি 'বিলুপ্তি' ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি অস্ত্র মহড়ায় অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ২ অক্টোবর প্রশাসনের জরুরি মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য সিলগালা করা হয়।