বিদেশে পাঠানোর নামে প্রতারণা ১০ বছরে প্রথম গ্রেফতার হলেন ইকবাল
Published : Wednesday, 12 October, 2022 at 12:00 AM
সৌদি আরবসহ বিভিন্ন জায়গায় উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে আসছিল মো. ইকবাল হোসেন (৪৪)। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রতারণা করে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ধুরন্ধর ও মিষ্টভাষী এই প্রতারক। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার। ধরা পড়েছে র?্যাবের জালে। এই প্রতারকের সঙ্গে আর কারা জড়িত-খতিয়ে দেখছে র?্যাব।
সোমবার (১০ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে ইকবালকে গ্রেফতার করা হয়। ভুক্তভোগীদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রেফতার করা হয় তাকে। এ সময় তার কাছ থেকে জব্দ করা হয় মোবাইল ফোন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, এটিএম কার্ড এবং নগদ ৬৪ হাজার ৮৮০ টাকা।
র?্যাব বলছে, জনশক্তি রফতানির কোনও লাইসেন্স ছিল না ইকবালের। সৌদি আরবে ফার্মেসিতে উচ্চ বেতনে চাকরি, বছরে দুটি বোনাস, থাকা-খাওয়া ফ্রিসহ লোভনীয় কথাবার্তা বলে প্রতারণামূলকভাবে ভিকটিমের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতো সে। ধারণা করা হচ্ছে, ৩০০ থেকে ৪০০ জনের কাছ থেকে এভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই প্রতারক।
র?্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) ফারজানা হক বলেন, বিভিন্ন সময় লোকজনদের কাছ থেকে টাকা নিলেও পরবর্তীতে অনেককেই বিদেশে পাঠাতে পারেনি ইকবাল। নির্দিষ্ট কোনও অফিস ছিল না তার। আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা চুক্তিতে প্রথম ধাপে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা নিয়ে চম্পট দিতো সে।
র?্যাব বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা দালালের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়া লোকজনদের সাথে পরিচিত হতো সে। বিভিন্ন দেশে তার লোকজন রয়েছে এবং প্রতিনিয়ত সেখানে লোকজন পাঠানো হচ্ছে এবং তারা ভালো অবস্থায় আছে-এসব বলে বিদেশ যেতে ইচ্ছুক লোকদের সাথে সখ্য গড়ে তুলতো সে। যত জনের কাছ থেকে টাকা নিতো, তার অনেক কম ব্যক্তিকে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশ পাঠিয়েছে সে। কিন্তু সেখানে গিয়ে কাক্সিক্ষত চাকরি না পেয়ে উল্টো সেখানকার দালালদের নির্যাতনের শিকার হতো ওই ব্যক্তিরা। এমন অনেকেই পরে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে।
র?্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সৌদি আরবে নিয়ে ভিকটিমদের পাসপোর্ট ও ভিসা রেখে দিতো আসামির সহযোগীরা। এরপর তাদের একটি রুমে আটক রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো। চাকরির জন্য তাদের কাছে আরও টাকা দাবি করতো আসামির সহযোগীরা।
তিনি বলেন, আসামি ইকবালের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই চক্রের সাথে আর কারা জড়িত জেনে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এছাড়া এখন পর্যন্ত কতজনের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে আসামি-তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।