ব্রয়লার মুরগিরসহ কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে
Published : Saturday, 15 October, 2022 at 12:00 AM
গত এক সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। আগের সপ্তাহেও কেজিতে ১০ বেড়েছিল এই মুরগির দাম। তার আগের সপ্তাহেও কেজিতে ১০ বাড়ে। অর্থাৎ টানা তিন সপ্তাহ ধরে বাড়ছে ব্রয়লার মুরগির দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তিন সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো। এখন সেই মুরগি বিক্রি করতে হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। এ কারণে মানুষ এখন ব্রয়লার মুরগি খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৬ শতাংশের মতো। আর গত এক মাসে এই মুরগির দাম বেড়েছে ১২ শতাংশের বেশি।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ার পাশাপাশি ফার্মের অন্যান্য মুরগির দামও বেড়েছে।
লেয়ার মুরগি ৩১০ টাকা কেজি এবং সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। গরুর মাংস ৭০০ টাকা, আর খাসির মাংস ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাড়ার তালিকায় রয়েছে ডিমও। ডজন প্রতি ১৫০ টাকা দরে ডিম বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। অনেক দোকানি প্রতিহালি ডিম বিক্রি করছেন ৫২ টাকাতেও।
আবারও বেড়েছে মোটা চালের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে মোটা চালের দাম কেজিতে বেড়েছে এক টাকা। টিসিবির তথ্য বলছে, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মোটা চালের দাম বেড়েছে প্রায় দুই শতাংশের মতো। চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহে যে মোটা চালের দাম ছিল ৪৭ টাকা কেজি, এ সপ্তাহে সেই একই চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা কেজি দরে। তবে গত সপ্তাহে যে মোটা চাল (স্বর্ণা ও চায়না ইরি) ৫২ টাকা কেজি দরে পাওয়া যেতো, এ সপ্তাহেও সেই চাল একই দামে বিক্রি হচ্ছে।
চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরু চাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮৫ টাকা পর্যন্ত। সরু চালের মধ্যে মিনিকেট ও নাজিরশাইলের বিক্রি বেশি। ভালো মানের মিনিকেট ৭৫ টাকা আর নাজিরশাইল কিনতে গুনতে হচ্ছে প্রতি কেজিতে ৮৫ টাকা। বাজারে আটাশ চালের কেজি ৬০ টাকা, গুটি স্বর্ণা ৫৫ টাকা, স্বর্ণা ৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
বাজারে বেড়েই চলছে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এরমধ্যে সরকারের ঘোষণা ছাড়া গত তিন-চার দিনের ব্যবধানে পুনরায় বেড়েছে চিনির দাম। প্রতি কেজি চিনি এখন ১০০ টাকা ছুঁই ছুঁই। গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি চিনির দাম ছিল ৮৪ থেকে ৮৮ টাকা। আজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে ৫০ কেজির চিনির বস্তা কিনতেন ৪২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৪৩০০ টাকায়। দুইদিন আগে চিনি কিনতে হয়েছে ৪৫০০ টাকায়। তবে প্যাকেট জাত চিনির দাম গত এক সপ্তাহে বাড়েনি। সেগুলো প্যাকেটের গায়ে লেখা দামেই (৯৫ টাকা) বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে শিম, বেগুন, টমেটো ও গাজর। অন্যান্য সবজির সর্বনিম্ন দাম প্রতি কেজি ৫০ টাকা।
হাতিরপুল ও সেগুন বাগিচা এলাকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতকালীন কিছু সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে। তবে সরবরাহ কম থাকায় সেগুলো দাম আকাশচুম্বী। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর মানিক নগর এলাকার বাজারে শিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজিতে। ভারত থেকে আমদানি করা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি দরে। ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে গাঁজর। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০-১০০ টাকা কেজি। কচুর লতি ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, পটল ৫৫ টাকা ও মুলা ৫০ টাকা করে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে। এককেজি দেশি কাঁচা মরিচের দাম ৮০ টাকা, আর ভারতীয় মরিচ ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পুঁইশাক ২৫-৩০ টাকা, পালং ১৫ টাকা, লাউ শাক ৩০ টাকা, কলমি ও লাল শাক ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর গোপীবাগ বাজারের সবজি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বাজারে সব কিছুর দামই বেড়েছে। কিছু সবজির দাম নতুন করে বেড়েছে। শিম বাজারে নতুন সবজি, তাই দামও একটু বেশি। বেগুন ও টমেটোর দাম আগের মতোই আছে।’
তবে লাগামহীনভাবে বাড়ছে মাছের দাম। সবচেয়ে কম দামে এখন বিক্রি হচ্ছে চাপিলা মাছ। এর কেজিও দেড়শ’ টাকার নিচে নেই।
রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট সাইজের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৩২০ টাকা। যা গত মাসেও বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায়। পাবদা মাছ সর্বনিম্ন সাড়ে ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে আকার ভেদে ৬০০ টাকা কেজি। বেলে মাছ সাড়ে ৭০০ টাকা কেজি। টেংরা বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া চিংড়ি ৪০০ থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।