দেশের উপকূলীয় এলাকায় অতিক্রম দেশের মধ্যভাগের দিকে এগুচ্ছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। এটি দেশের উত্তরপূর্ব দিকে এগুচ্ছে। ভোর নাগাদ এটি দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের বেশিরভাগ এলাকায় ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর নাগাদ এই বৃষ্টি কমে আসতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম প্রায় শেষ করেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। রাত নয়টা নাগাদ উপকুল অতিক্রম শুরু করে রাত ১২টা নাগাদ প্রায় শেষ করেছে অতিক্রম করা। খেপুপাড়া দিয়ে ঢুকে দেশের উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে ঝড়টি এখন। এর কেন্দ্র এখনও দেশের মধ্যেই আছে। রাতের মধ্যেই কুমিল্লা, ঢাকা, ফেনী হয়ে উত্তরপূর্ব দিক দিয়ে সিলেটের দিকে অগ্রসর হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, উপকূল অতিক্রম করে গেলেও এখনও ঝড়ের কেন্দ্র দেশের মধ্যেই আছে। সুতরাং এর প্রভাবে বৃষ্টি অব্যাহত আছে। এটি দেশের মধ্যভাগ দিয়ে সিলেটের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সেখানে যেতে যেতে ঝড়টা শক্তি হারিয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হিতে পারে বলে আমরা আশা করছি।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অতি দ্রুত অগ্রসর হয়ে আজ রাত ৯টায় ভোলার নিকট দিয়ে বরিশাল চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে।রাত ১২ নাগাদ উপকূল অতিক্রম প্রায় সম্পন্ন করেছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারে মধ্যে বাতাসের একটানা সর্ব্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ জন্য মোংলা, পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরগুলোকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো সাত নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। এ সকল এলাকায় ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় সর্ব্বোচ্চ ৮৮ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এদিকে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ছয় নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ছয় নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। এসকল এলাকায় ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় সর্ব্বোচ্চ ৭৫ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
দেশের অন্যান্য জেলায় ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফরিদপুর, ঢাকা, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও সিলেট জেলার নদী বন্দরগুলোকে তিন নম্বর নৌ-বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।