আগামী ৩ নভেম্বরের মধ্যে মহাসড়কে নসিমন-করিমনসহ অন্যান্য অবৈধ যান চলাচল বন্ধ না হলে ৪ নভেম্বর সকাল থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত বরিশাল নগরীর উত্তর ও দক্ষিণাংশে সকল স্থানীয় ও দূরপাল্লা রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছে মালিকরা। লঞ্চ মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর পূর্বের বিভিন্ন দাবিতে একই সময়ে লঞ্চ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা।
বিএনপি’র ৫ নভেম্বরের বিভাগীয় গণসমাবেশ সামনে রেখে বাস বন্ধের ঘোষণা স্রেফ ‘নাটক’ বলে দাবি করেছেন মহানগর বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা। কোন বাঁধা বিএনপি’র জনসমূদ্র রুখতে পারবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা। তবে আওয়ামী লীগ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে বিভাগীয় কমিশনার জানিয়েছেন।
গত ২৪ অক্টোবর বিভাগীয় কমিশনারকে দেয়া এক চিঠিতে জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি গোলাম মাসরেক বাবলু ও সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে’ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, মহাসড়কে থ্রি হুইলার, নসিমন-করিমনসহ অন্যান্য অবৈধ যান চলাচল দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণবঙ্গে বাস চলাচল বেড়েছে। মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল করায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এমতাবস্থায় যাত্রী সাধারণের নিরাপদ চলাচলের লক্ষ্যে মহাসড়কে অবৈধ যান বন্ধে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ২০২০ সালের ২৯ মে’র সিদ্ধান্ত কার্যকর করার দাবি জানানো হয় চিঠিতে। অন্যথায় ৪ নভেম্বর সকাল থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত নথুল্লাবাদ কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনাল থেকে নগরীর উত্তরাংশে আঞ্চলিক ও দূরপাল্লা রুটে বাস ও মিনিবাস চলাচল বিরত থাকবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিভাগীয় কমিশনারকে অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।
অপরদিকে গত ২২ অক্টোবর বিভাগীয় কমিশনার বরাবর বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন স্বাক্ষরিত অনুরূপ এক চিঠিতে ৩ নভেম্বরের মধ্যে দক্ষিণের মহাসড়কে অবৈধ যান বন্ধ না হলে ৪ ও ৫ নভেম্বর বাস চলাচল বিরত রাখার কথা জানানো হয়।
৫ নভেম্বর বরিশালে বিএনপি’র পূর্ব ঘোষিত বিভাগীয় গণসমাবেশ সামনে রেখে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিএনপি নেতারা।
কোনো দলীয় দৃষ্টিকোন থেকে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন। তিনি বলেন, মহাসড়কে অবৈধ যান বন্ধের দাবি দীর্ঘদিনের। ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। ৩ নভেম্বরের মধ্যে মহাসড়কে অবৈধ যান বন্ধ হলে রুটের বাস চলাচল বন্ধের প্রয়োজন হবে না।
৪ ও ৫ নভেম্বর বাস চলাচলে বন্ধের ঘোষণা ক্ষমতাসীনদের ‘নাটক’ বিএনপি’র এমন অভিযোগের বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক এমন কোন সিদ্ধান্ত নেই। বাস মালিকদের আভ্যন্তরীন কোন বিষয় আছে কিনা তা তারা জানেন না।
নগরীর নথুল্লাবাদ টার্মিনাল থেকে উত্তরাংশের স্থানীয় বাস ও ঢাকা-খুলনা সহ সারা দেশে দূরপাল্লা বাস চলাচল করে। অপরদিকে রূপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে সমূদ্র সৈকত কুয়াকাটা সহ দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ১৭টি রুটে বাস চলাচল করে। বাস বন্ধ হলে এসব রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা পড়েন দুর্ভোগে।
এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসান বলেন, বাস মালিক-শ্রকিদের দাবি ন্যায্য। মহাসড়কে অবৈধ যান চলা উচিত না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মহাসড়কে অবৈধ যান আটক করে। আবার ফাঁক গলে চলাচল করে। গতকাল আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় মহাসড়কে নসিমন-করিম সহ অবৈধ যান বন্ধে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বাস মালিকদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
নিউজ বিডি প্রতিদিনের