ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
সিত্রাংয়ে
কুমিল্লায় ৬ শ বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত
ক্ষতির প্রাথমিক তালিকা ও ত্রাণের চাহিদা পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে: ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা
Published : Thursday, 27 October, 2022 at 12:00 AM, Update: 27.10.2022 1:05:58 AM
কুমিল্লায় ৬ শ বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্ততানভীর দিপু:
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে কুমিল্লার প্রায় ৬ শ’ বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫১৭টি বাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত এবং ৭২টি বাড়িঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। কুমিল্লা জেলার ৭০ ইউনিয়ন সিত্রাংয়ের কবলে পড়েছে এবং এসব এলকায় দুর্গত মানুষের সংখ্যা ১২ শ’ দুই জন। জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানান।
মোহাম্মদ আবেদ আলী আরো  জানান, প্রাথমিক ভাবে দুর্গত এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও মানুষের তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো জেলার সঠিক ক্ষয়ক্ষতির এবং ত্রাণের চাহিদা জানা যাবে। আমরা প্রাথমিক ভাবে প্রাপ্ত তথ্য ও জরুরি চাহিদা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি।
উল্লেখ্য, গত ২৪ অক্টোবর রাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে আক্রান্ত হয় কুমিল্লা। জেলার দক্ষিনাঞ্চলের উপজেলাগুলোতে সব চেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়। নাঙ্গলকোট উপজেলায় গাছ চাপা পড়ে একই পরিবারের তিন জন মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়াও ওই উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামে গাছ উপড়ে পরে বিধ্বস্ত হয় বাড়িঘর ও প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গেছে, ত্রাণ ও পুনর্বাসক কার্যালয় প্রাথমিক ভাবে যে তালিকা বা তথ্য পেয়েছে বাস্তবে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরের  পরিমান দ্বিগুনেরও বেশি হতে পারে।
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রায়হান মেহবুব জানান, নাঙ্গলকোট উপটজেলার হেঁসাখাল, দোলখার, বক্সগঞ্জ, সাতবাড়িয়া, আদ্রা ইউপি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। হেঁসাখাল ও দৌলখাড়ে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্তত তিন শ’ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আমরা ধারনা করছি। ইউপি চেয়ারম্যানগণ তাদের এলাকা থেকে আমাদের এখনো তথ্য পাঠাচ্ছেন। দু’একদিনের মধ্যে আমরা মোট ক্ষতির পরিমান জানতে পারবো।  
এদিকে সিত্রাংয়ে কুমিল্লার শুধু বাড়িঘরই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, পাশাপাশি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এবং বানিজ্যিক স্থাপনাও ক্ষতির শিকার হয়েছে। এসব বিষয়ে উপজেলাগুলো থেকে স্বতন্ত্র তথ্য নেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। সার্বিক ক্ষতির বিস্তারিত এবং ত্রানের চাহিদার সঠিক তথ্য জানতে দু’একদিন সময় লাগবে।
ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাড়িঘর ক্ষতির শিকার হয়েছে নাঙ্গলকোট উপজেলায়। বেশিরভাগ বাড়িঘরই গাছ চাপায় ভেঙ্গে গেছে। কোথাও কোথাও বাড়িঘর এবং স্থাপনার চাল উড়ে গেছে অথবা দেয়াল ধ্বসে গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ধ্বসে যাওয়া বাড়িঘরের বাসিন্দারা বেশিরভাগই নিম্নমধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত। পুনরায় ঘর তৈরী করতে সরকারি সাহায্য সহযোগিতা না পেলে ভোগান্তিতে পরবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো।  
এদিকে সিত্রাংয়ের প্রভাবে কুমিল্লায় কৃষিখাতে যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান। তিনি জানান, সিত্রাংয়ের ঝড়ো হাওয়ায় কিছু ধানি জমি শুয়ে গেছে। একেবারে বিনষ্ট হয়েছে এমন ধানি জমি নেই। আর আগাম শীতকালীন শাক সবজির যে ক্ষতি হবে তাও- আমরা সহজে পুষিয়ে নিতে পারবো। প্রতিটি উপজেলায় কৃষি কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে কৃষকরা যে ক্ষতিপূরণ বা পরামর্শ পায় সেজন্য আমরা সচেষ্ট রয়েছি।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন জানান, সকল উপজেলা থেকে সিত্রাংয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরী করে পাঠাবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ। আপাতত একটি প্রাথমিক জরিপ করা হয়েছে। যেসব বাড়ি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে-সেগুলোর দিকে আমরা বিশেষ নজর রেখেছি। উপজেলা পর্যায় থেকে আমরা ত্রানের চাহিদা পেলে মন্ত্রনালয়ে পাঠাতে পারবো।