২০১৭
সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের
জুনে। এই তিন বছরে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি মাত্র ৮ শতাংশ। তবে শিক্ষক
প্রশিক্ষণসহ প্রকল্পের প্রায় প্রতিটি পর্যায়ে আর্থিক দুর্নীতির প্রমাণ
পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর (ডিআইএ)। এ
দুর্নীতি না হলে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে দেশের অনলাইন পাঠদানে ঘটতে পারতো
যুগান্তকারী কিছু, আসতো বৈপ্লবিক পরিবর্তন। প্রশিক্ষণ
পরিচালনায় কোনও ভেন্যু সরেজমিন পরিদর্শন না করেও প্রকল্প পরিচালক সম্মানি
বাবদ ১৬ লাখ ৮১ হাজার ৫০০ টাকা নিয়েছেন। এই টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরতের
সুপারিশ করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। দেশে প্রথমবার কোনও প্রকল্পে এমন নজির
সৃষ্টি হল।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,
প্রকল্পটির প্রথম পর্যায়ে ঠিকাদারদের সন্তুষ্ট করতে না পারায় প্রথম প্রকল্প
পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই সুযোগে
মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার আস্থাভাজনকে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ
দিতে প্রথম পরিচালককে সরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও প্রথম প্রকল্প পরিচালকের
বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। নতুন
প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার পর শুরু হয় আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি। শিক্ষক
প্রশিক্ষণের নামে অর্থ তছরুপ এবং প্রকল্প পরিচালকের ক্ষমতার বাইরে গিয়ে
অর্থ ব্যয় করা হয়।প্রকল্পের
দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর। অধিদফতরের
উপরিচালক হেনা খাতুনকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে মাধ্যমিক ও
উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- শিক্ষা পরিদর্শক মো.
হেমায়েত উদ্দীন এবং অডিট অফিসার মো. ফরিদ উদ্দিন। তদন্ত প্রতিবেদন সম্প্রতি
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। এর আগে এ প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে
আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় আরও দুটি তদন্ত হয়েছে। সেসব তদন্তেও আর্থিক
দুর্নীতর প্রমাণ পাওয়া গেছে।এই প্রকল্পে মোট বরাদ্দ এক হাজার ৩৫৩ কোটি
টাকা। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারিত মেয়াদ শেষ
হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বছর মেয়াদ বাড়ালেও এখন পর্যন্ত আরডিপিপি
(সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) তৈরি হয়নি। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে
বর্ধিত মেয়াদের ৬ মাসও শেষ হয়েছে।প্রকল্পের পূর্ণ মেয়াদকালে
মাল্টিমিডিয়া ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ক্লাস পরিচালনার জন্য ২৪ হাজার
৩০৯টি ব্যাচের মাধ্যমে সর্বমোট ৫ লাখ ৭২ হাজার ৮৪০ জন শিক্ষক কর্মকর্তাকে
বিভিন্ন ভেন্যুতে ১২ ধরনের প্রশিক্ষণের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।