বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, ধর্ষণ প্রমাণে শারীরিক
পরীক্ষার ক্ষেত্রে এ পদ্ধতির কোনো বিজ্ঞানসম্মত ভিত্তি নেই এবং এটি
মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। পৃথিবীর অনেক দেশে আগে এই টেস্টের প্রচলন থাকলেও
বর্তমানে এটি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের মানবাধিকারকর্মীরা এ পদ্ধতি বন্ধে একটি মামলা করেন। সেই
মামলার শুনানি শেষে সোমবার লাহোরের হাইকোর্ট এ রায় দেন। পাঞ্জাবপ্রদেশে
এটি কার্যকর হবে। তবে পাকিস্তানে এ পদ্ধতি নিষিদ্ধের রায় এটিই প্রথম।
মানবাধিকারকর্মীদের আশা খুব দ্রুতই এ রায় সারাদেশে কার্যকর হবে।
সম্প্রতি পাকিস্তানে ধর্ষণ আইনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। ধর্ষকদের
কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ধর্ষকদের খোজা করে দেয়ার বিধান রেখে আইন
পার্লামেন্টে পাস হয়েছে। কিন্তু ভার্জিনিট টেস্ট বা টু ফিঙ্গার টেস্ট নিয়ে
এতদিন পর্যন্ত কেউ কোনো কথা বলেননি।
বস্তুত টু ফিঙ্গার টেস্ট এক বহু পুরনো প্রচলিত পরীক্ষা। যেখানে মেডিকেল
অফিসার ধর্ষণের পর নারীর বিশেষ অঙ্গে দুটি আঙুল ঢুকিয়ে কুমারিত্ব পরীক্ষা
করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বহুদিন আগেই জানিয়েছে, এ পরীক্ষার কোনো অর্থ
নেই। এ পরীক্ষা থেকে রেপ সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানাও যায় না। বরং এই টেস্টের
মাধ্যমে নারীকে অপমানই করা হয়।
৩০ পৃষ্ঠার রায়ে বিচারপতি আয়েশা এ মালিক বলেন, ‘কুমারিত্ব পরীক্ষার এই চর্চা ভুক্তভোগী নারীর আত্মমর্যাদায় আঘাত হানে।’
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের তথ্যমতে, দেশটিতে প্রতি বছর শত শত নারী
ধর্ষণের শিকার হন। কিন্তু আইনি দুর্বলতার কারণে খুব কম ঘটনায় দোষীদের
শাস্তি দেয়া সম্ভব হয়। তা ছাড়া অনেক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েও
মামলা-মোকদ্দমার হয়রানির কথা চিন্তা করে ঘটনা চেপে যান।
ডিসেম্বরে ধর্ষণবিরোধী নতুন আইনের মাধ্যমেই আসলে এ পদ্ধতি নিষিদ্ধের
উদ্যোগ নেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট। তবে ওই আইনে ধর্ষণের পর ক্ষত পরীক্ষায়
ব্যবহারিক উপায় অবলম্বনের বৈধতা রাখা হয়।
২০১৩ সালে ভারত এবং ২০১৮ সালে বাংলাদেশ তথাকথিত এই ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ পদ্ধতি নিষিদ্ধ করে।