স্বামীর পেনশনের টাকা তুলে ব্যাংক থেকে বের হওয়ার সময় এক ছিনতাইকারী
রাবেয়া বেগম নামে অশীতিপর বৃদ্ধার টাকাগুলো নিয়ে চোখের পলকেই পালিয়ে গেছে।
বুধবার বিকালে মাগুরা শহরে এ ঘটনা ঘটে।
রাবেয়া (৮৫) মাগুরার সদর উপজেলার বাগবাড়িয়া স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান
শিক্ষক গোলাম রসূলের স্ত্রী। গ্রামের বাড়ি একই উপজেলার আলোকদিয়া
মুন্সিবাড়ি।
বুধবার বিকালে মাগুরা সোনালী ব্যাংকের প্রধান ফটকে অসহায় বৃদ্ধা
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তার স্বামী দুই বছর আগে মারা গেছেন। পরিবারে চার
ছেলে তিন মেয়ে। ছোট দুটি ছেলে যমজ ও প্রতিবন্ধী। বাকি ছেলে দুটি বলতে গেলে
বেকার। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। এখন স্বামীর পেনশনের টাকাতেই চলে তাদের
সংসার।
বৃদ্ধা রাবেয়া বেগম জানান, প্রতি মাসে তিনি একাই আসেন পেনশনের টাকা
তুলতে। এদিনও এসেছেন তেমনি। ব্যাংকের তিনতলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময়
হঠাৎ করেই এক যুবক তার সামনে এসে দাঁড়ায়। সরকার প্রত্যেককে করোনার ভাতা
দিচ্ছে কিন্তু ভুল করে তাকে দেয়া হয়নি- এসব কথা বলে তার কাছ থেকে উত্তোলিত ৬
হাজার ৪২৭ টাকা নিয়ে আসছি বলে পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, ওই যুবকের নাম সোহাগ এবং গ্রামের বাড়ি মাগুরার বারাশিয়া
গ্রামে বলে তাকে জানিয়েছিল। কিন্তু তাকে এখন দেখতে পাচ্ছি না। সে আমার টাকা
নিয়ে চলে গেছে। কী করব এখন? সংসার চলবে কীভাবে?
অসহায় নিরুপায় বৃদ্ধা ব্যাংকের সামনে দৌড়াদৌড়ি করছেন; আর কান্নাকাটি
করছেন। ততক্ষণে লম্পট যুবক ভারি মোটরসাইকেল হাঁকিয়ে পালিয়ে গেছে অনেক দূরে।
অথচ বৃদ্ধার ব্যাগে পুরনো একটি মোবাইল ফোন থাকলেও নেই অবশিষ্ট টাকা বাড়ি
ফিরে যাওয়ার মতো। এ অবস্থায় গ্রামের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার মতো অল্প কয়েকটি
টাকা হাতে ধরিয়ে দিতেই ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন।
ব্যাংকের ফটকে প্রতারণার বিষয়টি মাগুরা সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক
রশিদুল ইসলামকে জানালে এ বিষয়ে তার কিছুই করার নেই বলে জানান তিনি।
ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকে ৮টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু কোনো
ক্যামেরাই কাজ করে না। সংযোগটি দীর্ঘদিন নষ্ট হয়ে আছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন
কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো কাজ হয়নি। বিধায় ওই যুবকের ছবিও পাওয়া সম্ভব নয়।