চট্টগ্রামে মৃত্যুশূন্য টানা সপ্তম দিনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নেমে
এসেছে একশ’র নিচে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৮৪ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত
হয়। সংক্রমণের হার ৬ দশমিক ৪২ শতাংশ। মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) রাতে সিভিল
সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রামে এক হাজার ৩০৮টি নমুনা
পরীক্ষায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮৪ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত ৩০ হাজার ৯৮০
জন।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামে শনাক্ত রোগী একশ’র নিচে নামলেও সংখ্যা ও হারে গত ২
জানুয়ারি ছিল নতুন বছরের সর্বনিম্ন সংক্রমণ। ওই দিন ৬৭ জন রোগী শনাক্ত হয়।
সংক্রমণের হার ছিল ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ।
এর আগে ডিসেম্বর মাসে তিনদিন একশ’র নিচে রোগী শনাক্ত হয়েছিল। ১২
ডিসেম্বর ৭৮ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মেলে। সংক্রমণের হার ছিল ৫ দশমিক
৮৭ শতাংশ। ১৭ ডিসেম্বর পরীক্ষায় ৭৯ জন করোনা শনাক্ত হন। সংক্রমণের হার ছিল ৬
দশমিক ৩৮ শতাংশ। ১৯ ডিসেম্বর ৯৬ জনের দেহে ভাইরাস মেলে। সংক্রমণের হার ছিল
৭ দশমিক ৬০ শতাংশ।
এদিকে, গত ২৯ ডিসেম্বর দুই জনের মৃত্যুর পর চট্টগ্রামে করোনায় আর কোনো
রোগীর মৃত্যু হয়নি। তাই মৃতের সংখ্যা ৩৫৯ জনই রয়েছে। মৃতদের মধ্যে শহরের
বাসিন্দা ২৫৬ জন ও গ্রামের ১০৩ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, নগরের সাতটি ও কক্সবাজার
মেডিকলে কলেজ ল্যাবে মঙ্গলবার চট্টগ্রামের এক হাজার ৩০৮ জনের নমুনা পরীক্ষা
করা হয়। নতুন শনাক্ত ৮৪ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৭৪ জন ও সাত উপজেলার ১০
জন।
উপজেলার মধ্যে সীতাকুণ্ড, রাউজান ও চন্দনাইশে দুইজন করে এবং রাঙ্গুনিয়া,
ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও মিরসরাইয়ে একজন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট
শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৩০ হাজার ৯৮০ জন, যেখানে শহরের বাসিন্দা ২৪
হাজার ৭ জন ও গ্রামের ৬ হাজার ৯৭৩ জন।
সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৪২ জন। মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ২৯ হাজার
৬৪৬ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তিন হাজার ৯৪০
জন এবং হোম আইসোলেশনে থেকে ২৫ হাজার ৭০৬ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে
গতকাল যুক্ত হন ২০ জন। ছাড়পত্র নেন ১৮ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন
এক হাজার ৩৭৬ জন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ল্যাবে
২৪৯টি নমুনা পরীক্ষা করে নয়জনের শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম
ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে
৫৯টি নমুনা পরীক্ষা হয়। এতে পজেটিভ আসে ছয়জনের।
এছাড়া ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ৫৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ১০ জন, শেভরণ
ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ১৫০টি নমুনা পরীক্ষা করে ২২ জন, চট্টগ্রাম মা ও
শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৩৫টি নমুনা পরীক্ষা করে সাতজন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত
হয়েছেন।
অন্যদিকে, কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ৪৯টি নমুনা পরীক্ষা করে কারো শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মেলেনি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ হার ছিল-
বিআইটিআইডি’তে দুই দশমিক ৮৭ শতাংশ, চমেকে তিন দশমিক ৬১, চবিতে ১০ দশমিক ৭৪,
সিভাসু’তে ১০ দশমিক ১৭, শেভরনে ১৪ দশমিক ৬৬, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৮
দশমিক ৮৭ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ২০ শতাংশ।