কুমিল্লার চান্দিনা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন ৫ প্রার্থী। আগামী ১৬ জানুয়ারী ভোট গ্রহণকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা।
ওই পাঁচ প্রার্থী হলেন- আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগ সদস্য শওকত হোসেন ভূইয়া, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পৌর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. আলমগীর খাঁন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) মনোনীত প্রার্থী জামশেদ আহমেদ জাকি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম এবং একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শামীম হোসেন।
১৪.২ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া চান্দিনা পৌরসভার এটি ৪র্থ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটারা কষছেন নানা হিসাব-নিকাশ। কোন প্রার্থী কেমন অব¯’ানে আছেন? কার কত সম্পদ আছে? কে কত টাকা খরচ করতে পারবেন? এমন নানা হিসাবে ভোটারদের মাঝে চলছেন আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
তবে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া তাদের হলফনামায় দেখা গেছে, ওই পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে ¯’াবর ও অ¯’াবর সম্পদে এগিয়ে রয়েছেন একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শামীম হোসেন। বিভিন্ন মামলায় এগিয়ে রয়েছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শাহ্ মো. আলমগীর খান ও এলডিপি প্রার্থী জামশেদ আহমেদ জাকি। সম্পদের দিক থেকে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী শওকত হোসেন ভূইয়া।
আওয়ামলীগ মনোনীত প্রার্থী শওকত হোসেন ভূইয়া
পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। পেশায় মৌসুমী ব্যবসায়ী। শিক্ষাগত যোগ্যতায় এইচএসসি। ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। নগদ টাকা ১ লক্ষ, স্বর্ণালংকার ১০ ভরি। ¯’াবর সম্পত্তি রয়েছে ১৮ শতাংশ। বাড়িতে আধাপাকা টিনসেড ঘর। এই প্রার্থীর নামে নেই কোন ব্যাংক ঋণ। স্ত্রী খুরশিদা আক্তার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করলেও তার নামে নেই কোন সম্পদ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শামীম হোসেন
পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শামীম হোসেন। পেশায় চান্দিনা বাজারের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিগ্রি পাশ। ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় ১৬ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা। ক্রেডিট কার্ডে রয়েছে ৫ হাজার ইউএস ডলার, ব্যাংকে জমা ১৭ লক্ষ ২৩ হাজার, ২টি ডিপিএস-এ ২ লক্ষ ৬০ হাজার, ব্যবসার মূলধন ১ কোটি ৪৬ লক্ষ ৬৫ হাজার। গাড়ি ব্যবহার করেন ৩০ লক্ষ টাকার। তার নগদ টাকা ৫০ হাজার! স্ত্রীর নামে স্বর্ণ রয়েছে ৩০ ভরি।
¯’াবর সম্পত্তিতে রয়েছে ৭২ শতাংশ জমির ৩/১ অংশ। বাড়িতে রয়েছে ৪ তলা বিশিষ্ট্য আধুনিক ভবন। তবে ব্যাংকে দেনা রয়েছেন প্রায় ৩ কোটি টাকা। তার বিরুদ্ধে একটি মামলা থাকলেও তা বাদী কর্তৃক নিষ্পত্তি হয়।
বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শাহ্ মো. আলমগীর খান
পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহ্ মো. আলমগীর খাঁন। পেশায় ব্যবসায়ী। শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি। ২০১০ সালের চান্দিনা পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ব্যবসা থেকে তার বাৎসরিক আয় ৩ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা রয়েছে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে স্বর্ণালংকার রয়েছে ২৫ হাজার টাকার। ¯’াবর সম্পত্তির মধ্যে ২০ শতাংশ কৃষি জমি ও ৫ শতাংশ অকৃষি জমি থাকলেও তা যৌথ পরিবারের মাঝে অবন্টিত রয়েছে।
ওই প্রার্থীর তেমন কোন সম্পদ না থাকলেও ৫ টি মামলায় জড়িয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ৩টি মামলা থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছে। বিচারাধীন রয়েছে ২টি।
এলডিপি মনোনীত প্রার্থী জামশেদ আহমেদ জাকি
পৌর সভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জামশেদ আহমেদ জাকি। পেশায় মৌসুমী ব্যবসায়ী। শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিগ্রি পাশ। ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় ৩ লক্ষ ২০ হাজর টাকা। মৌসুমী ব্যবসায় মূলধন রয়েছে ১০ লক্ষ টাকা। নগদ ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। নিজ নামে স্বর্ণালংকার রয়েছে ৬২ ভরি। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা থাকলেও সবগুলোতে জামিনে রয়েছেন তিনি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী কাজী রেজাউল করিম
নির্বাচনী মাঠে আলোচনায় নেই তিনি। পেশায় একজন ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি। ইসলামী দল করার কারণে প্রার্থীও হয়েছেন পৌর নির্বাচনে। পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। তার বাৎসরিক আয় ৬০ হাজার। অ¯’াবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে স্ত্রীর নামে দেড় ভরি স্বর্ণালংকার।