পিঁপড়া খেয়েছে চোখ, হাত-পা কামড়েছে শিয়াল
Published : Saturday, 16 January, 2021 at 12:00 AM
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় অপহরণের তিন দিন পর বাকপ্রতিবন্ধী সানজিদা আক্তার (৭) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুুুলিশ। পুলিশের ধারণা, মৃত্যুর পর সানজিদার হাত-পায়ে শিয়ালে কামড়েছে। তার চোখ দুটোও ছিল না। এগুলো পিঁপড়া খেয়ে নষ্ট করে ফেলতে পারে।
শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর জঙ্গল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত সানজিদা আক্তার উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকার শাহজাহান আকন্দের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিহত সানজিদার মরদেহ দেখতে হাজার হাজার মানুষ শাহজাহান আকন্দের বাড়িতে ভিড় করছেন। সানজিদার মা কান্না করতে করতে বার মুর্ছা যাচ্ছেন। বাবা মেয়ে হারানোর শোকে কাতর। এলাকাবাসী বলছেন, এমন ঘটনা রামচন্দ্রপুর গ্রামে আগে ঘটেনি। হত্যাকারীদের কঠোর বিচার চাইছেন এলাকাবাসী।
নিহতের মা রেহেনা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়েকে অপহরণ করে ৫০ হাজার টাকা চেয়ে চিঠি দিয়েছিল। এর পরে বিকাশে ২০ হাজার টাকা দিকে বলেছিল। টাকা দিতে পারিনি বলে আমার মেয়েকে খুন করে লাশ ফেরত দিল। আমার মেয়েকে হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’
নিহতের বাবা শাহজাহান আকন্দ বলেন, ‘গত মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ির উঠান থেকে অপহরণ হয় তার মেয়ে সানজিদাকে। একটি চিরকুটে লিখে যাওয়া নম্বরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। কিন্তু নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। বুধবার অপহরণকারীরা ফোন দিয়ে তাদের বিকাশ নম্বরে ২০ হাজার টাকা পাঠাতে বলে। টাকা না পাঠানোয় লাশ হলো আমার মেয়ে। বুধবার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলেও পুলিশ আমার মেয়েকে উদ্ধার করতে পারেনি। সকালে জঙ্গলে লাশ পাওয়া গেল।’
এ বিষয়ে তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, ‘নম্বর ট্র্যাকিং করে অপহরণকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছিল পুলিশ। কিন্তু আজ সকালে সানজিদার লাশ পাওয়া গেল। পুরো বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে। আশা করছি, অচিরেই অপরাধীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হব।’
সার্কেল এএসপি দীপক চন্দ মজুমদার বলেন, ‘নিহতের হাত ও পায়ে শিয়ালের কামড়ের চিহ্ন রয়েছে। চোখ দুটি সম্ভবত পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলতে পারে।’
তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি-না বা কবে খুন করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্তের পর এ বিষয়গুলো বলা যাবে। তবে, এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।’