নিজস্ব
প্রতিবেদক: নতুন করোনাভাইরাসে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু আগের দিনের চেয়ে বাড়লেও
শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচশর ঘরে নেমেছে। শনিবার বিকালে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আগের ২৪ ঘণ্টায় ২১ জন কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যুর
খবর জানানো হয়। এই সময়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫৭৮।
গত এক দিনে মারা যাওয়া ২১ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট ৭ হাজার ৮৮৩ জনের মৃত্যু হল।
আরও ৫৭৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৬৩ জন হয়েছে।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৬৩৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে
উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৭১ হাজার ৭৫৬
জন হয়েছে।
আগের দিন অর্থাৎ শুক্রবার ১৩ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর; যা গত আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।
আর গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা গত সাড়ে আট মাসে সবচেয়ে কম।
গত বছরের ২ মে ৫৫২ জন রোগী শনাক্তের খবর দেওয়া হয়েছিল। এরপর শনিবারই সবচেয়ে কম রোগী শনাক্ত হল।
বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ। গত ২ জুলাই ৪ হাজার
১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
গত ২৪
ঘণ্টায় মোট ১২ হাজার ২১৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫৭৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস
সংক্রমণ ধরা পড়ে। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩৪ লাখ ৪৪ হাজার ৭টি।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে নমুনা পরীক্ষা ৪ দশমিক
৮৫ শতাংশ বাড়লেও শনাক্তের সংখ্যা ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায়
শনাক্তের হার ৪.৭৩ শতাংশ এবংএ নাগাদ শনাক্তের হার ১৫. ৩০ শতাংশ।
গত এক সপ্তাহে মৃতের সংখ্যা ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ কমেছে। সেই সঙ্গে ১১ দশমিক ৬৭ শতাংশ কমেছে সুস্থতার হারও।
সার্বিকভাবে শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯.৫১ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১.৪৯ শতাংশ।
প্রথম
রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক
দিনে সর্বাধিক।
শনিবারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ২১ জন
মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পুরুষ ১৩ জন, নারী ৮ জন। এই ২১ জনের মধ্যে ২১ জনই
হাসপাতালে মারা গেছেন।
নতুন করোনাভাইরাসে পুরুষের সংক্রমণ হার বেশি।
প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫ হাজার ৯৭৬ জন
পুরুষ। নারী মারা গেছে ১ হাজার ৯০৭ জন।
গত এক দিনে মৃত ২১ জনের মধ্যে ১২
জনের বয়স ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে। এছাড়া ৪ জনের বয়স ৫১-৬০ বছরের মধ্যে। ৩ জনের
বয়স ছিল ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। আর ১ জনের বয়স ৩১-৪০ বছরের মধ্যে।
এই
পর্যন্ত যারা মারা গেছেন, তাদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে জানানো হয়, ষাটোর্ধ্ব
রোগীদের মৃত্যুর হার ৫৫ দশমিক ০২ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বয়সী রোগীদের মৃত্যুর
হার ২৫ দশমিক ১৯ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার ১১ দশমিক
৫৮ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ, ২১
থেকে ৩০ বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী
বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ ও শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সী
রোগীদের মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে মারা গেছে ১৩ জন। বাকিদের মধ্যে ৬ জন চট্টগ্রাম ও ২ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা।
এলাকাভিত্তিক
বিশ্লেষণে মৃতের হার ঢাকা বিভাগে ৫৫ দশমিক ৪১ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮
দশমিক ৩৬ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ, খুলনায় ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ,
বরিশালে ৩ দশমিক ০৪ শতাংশ, সিলেটে ৩ দশমিক ৮১ শতাংশ, রংপুরে ৪ দশমিক ৪৮
শতাংশ ও ময়মনসিংহে ২ দশমিক ৩২ শতাংশ।
এ পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন,
৪ হাজার ৩৬৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৪৪৭ জন, রাজশাহীতে ৪৫০ জন,
খুলনায় ৫৪২ জন, বরিশাল ২৪০ জন, সিলেটে ৩০০ জন, রংপুরে ৩৫৩ জন ও ময়মনসিংহ
বিভাগে ১৮৩ জন।