ডায়াবেটিস এখন এক জাতীয় রোগে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে প্রায় সব পরিবারেই অন্তত একজন করে ডায়াবেটিক রোগী রয়েছেন! আর পরিবারে কারো ডায়াবেটিস থাকলে এটি হওয়ার সম্ভাবনাও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এজন্য সঠিক জীবনযাপন ও খাদ্যতালিকা মানতে হবে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রেখে নির্মূল করা বেশি কঠিন নয়। খাদ্যাভ্যাস, ঘুম ও পুষ্টিকর খাবার খেলেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তবে যারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছেন; তারা চাইলেই ভেষজ উপাদানে ভরসা রাখতে পারেন।
এক্ষত্রে রান্নাঘরের কিছু উপাদান রয়েছে, যেগুলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার মোক্ষম দাওয়াই। এগুলো খেলে আর ওষুধের প্রয়োজন হবে না। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক-
দারুচিনি: এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিয়মিত যারা ৩-৬ গ্রাম দারুচিনি খান; তাদের শরীরের গ্লুকোজের মাত্রা ৩০-৪০ দিনের মধ্যে কমতে শুরু করে। যা ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
হলুদ: অ্যান্টি-ডায়াবেটিক উপাদানসমূহ রয়েছে হলুদে। এতে থাকা কারকিউমিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এজন্য শরীরের বিটা-সেলের উন্নতি ঘটে ও ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ ছাড়াও ডায়াবেটিসের প্রভাবে হার্ট ও কিডনিকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে হলুদ।
মেথি: এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মেথি ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরের গ্লুকোজের মাত্রা কমায়। টানা ৩ বছর মেথি খেলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা ২৩-৫৫ শতাংশ কমে যেতে পারে।
আমপাতা: শুকনো আমপাতার গুঁড়া ওজন কমাতে পারে। রক্তের গলুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনে আমপাতা। আর ওজন যদি নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে ডায়াবেটিসসহ দীর্ঘমেয়াদী রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে না।
তেজপাতা: অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর তেজপাতা। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ১-২ গ্রাম তেজপাতা খেলে হৃদরোগসহ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে। বিপাকক্রিয়া উন্নত করে তেজপাতায় থাকা পুষ্টিগুণ।
এলাচ: অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে এলাচে। নিয়মিত এ মশলার চা খেলে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ ছাড়াও এনার্জি বাড়ায়, কোষের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণে রাখে এলাচ।
লবঙ্গ: ডায়াবেটিস হলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। এতে করে চাপ পড়ে লিভারের উপর। লবঙ্গে থাকা গ্যালিক অ্যাসিড, কেটেকিন এবং কোরেসেটিনের মতো পলিফেনলগুলো লিভারের কার্যকারিতা বাড়ায়।
জিরা: এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, জিরা রক্তের গ্লুকোজ, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা (দেহের ফ্যাট), লেপটিন (শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে এমন একটি হরমোন) এবং ডায়াবেটিস রোগীদের অক্সিডাইজড এলডিএল কমাতে সহায়তা করে। এ সবই ডায়াবেটিস জটিলতা প্রতিরোধের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
মৌরি: ডায়াবেটিসের ওষুধ তৈরিতেও ব্যবহৃত হয় মৌরি। গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে আনে মৌরি। এজন্য নিয়মিত খেতে হবে মৌরি ভেজানো পানি বা চা।
সরিষা: ডায়াবেটিক বিরোধী উপাদান রয়েছে বাদামি সরিষায়। নিয়মিত সরিষা খেলে ৭-২৫ দিনের মধ্যে রক্তের গ্লুকোজ কমতে পারে, বলে জানিয়েছে এক সমীক্ষা।