ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
দেবিদ্বারে ধান উৎপাদন বাড়াবে ‘ট্রে-নার্সারি’ প্রযুক্তি
Published : Tuesday, 19 January, 2021 at 12:00 AM
শাহীন আলম, দেবিদ্বার।
কুমিল্লার দেবিদ্বারে ‘ট্রে নার্সারি’ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করে ধান চাষে সফলতা পাচ্ছে কৃষক। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গোল্ডেন বার্ন কিংডম (জিবিকে) উদ্ভাবিত এই পদ্ধতিতে সনাতন পদ্ধতির চেয়ে ধান চাষে ফলন বেড়েছে ৪৩ শতাংশ। এ পদ্ধতিতে ধানের চারা উৎপাদনে সময়ও যেমন কম লাগে তেমনি শ্রম এবং ব্যয়ও কম। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন,  ট্রে পদ্ধতি জনপ্রিয় করা গেলে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি চাল রপ্তানির ক্ষেত্রেও দারুণ অগ্রগতি হবে।
শনিবার সকালে উপজেলার ইউসুফপুরে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক মো. মনিরুল ইসলাম ৩৫ শতকে, শাহ পরান ৫০ শতকে, যুবায়ের রহমান ৮০ শতকে,  হেফজু মিয়া ২০ শতকে, কামাল হোসেন ১২০ শতকে এবং মনোয়ারা বেগম ৩০ শতকে  হাইব্রিড তেজ গোল্ড জাতের ধান রোপন করার জন্য ট্রে পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করেছেন। ট্রে পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনকারী কৃষক মো. মনিরুল ইসলাম ৫০ একর জমির জন্য ৩০ জন কৃষক ট্রে-নার্সারি পদ্ধতি ব্যবহার করে হাইব্রিড-তেজ গোল্ড জাতের ধানের চারা উৎপাদন করেছেন। তিনি কুমিল্লার কাগজকে জানান,  আমাদের দেখে অন্য কৃষক এ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনে উৎসাহিত হচ্ছে। কম সময়, স্বল্প ব্যয়ে অধিক ফলন আশা করছি।
নারী কৃষক রাজিয়া বেগম কুমিল্লার কাগজকে জানান, ট্রে পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনে বীজতলার জায়গা, শ্রম ও সময় কম লাগে, ঝুঁকিও নেই। মৌসুমী শ্রমিকের অভাবে চাষাবাদ বাধাগ্রস্ত হবে না। যান্ত্রিক প্রযুক্তি  চারা রোপন সময়োপযোগী।
ইউসুফপুরের কৃষি উপসহকারী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ১২০ জন কৃষকের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৩০জন কৃষককে ট্রে পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনে বিভিন্ন প্রণোদনাসহ উৎসাহিত করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের চারা বান্ডিল আকারে বেঁধে রোপণ যন্ত্রের (রাইস ট্রান্সপ্লান্টার) মাধ্যমে মাঠে রোপন করা হয়। এ পদ্ধতিতে একজন মানুষ একটি রোপন যন্ত্র ব্যবহার করে দিনে ১৫ বিঘা জমিতে চারা রোপন করতে পারে। এ প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষি শ্রমিকের সংকট নিরসন এবং ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার কবিরাজ কুমিল্লার কাগজকে জানান, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সাথে তাল মিলিয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কৃষি ক্ষেত্রে যান্ত্রিকীকরণের বিকল্প নেই। আর এই যান্ত্রিকীকরণের জন্য রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। সম্পূর্ণ হাতের ছোঁয়া ছাড়া এ চাষ পদ্ধতি যেন ডিজিটাল বাংলাদেশেরই একটি প্রতিচ্ছবি। তিনি আরও বলেন, ট্রে পদ্ধতিতে দ্রুত গতিতে শ্রমিক ছাড়া এবং কম খরচে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ধানের চারা লাগানোর জন্য সিডলিং ট্রে দরকার হয়। এই সিডলিং ট্রে’র মাধ্যমে তৈরী করা ধানের চারা দিয়ে আধুনিক রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে মাত্র ৮০ টাকার তেল খরচ দিয়ে এক বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপন সম্ভব।