বৈশ্বিক মহামারি করোনায় থমকে গেছে
বিশ্ব, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও ভঙ্গুর। দেশে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ায় গত
মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বসে বসে অলস সময় পার করতে
হচ্ছে লাখো শিক্ষার্থীকে।তবে এ সময়েও বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতেই সামাজিক
উদ্যোগের ক্ষেত্রে এক নতুন ধারা সূচিত হয়েছে। বিশেষত তরুণরা তরুনীরা এ সময়
এগিয়ে এসেছেন নানামুখী সৃজনশীল কর্মে। সেই সঙ্গে উদ্যোগী তরুণ-তরূণীদের
প্রতিনিধিত্ব করছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারজানা ইসলাম নালিফা
ও ফারহান সাদী।
ফারজানা ইসলাম নালিফা, এগ্রোটেকনোলজি
ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। করোনার সময়টায় নিজেকে গতিশীল রাখা ও
মানুষের জন্য কিছু করার উদ্দেশ্য নিয়ে মাত্র ৮হাজার টাকা মূলধন নিয়ে শুরু
করেন এক ভিন্নধর্মী অনলাইন ব্যবসায়।
তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকে প্লান্ট ও ভেষজ
নিয়ে কিছু করার ইচ্ছে ছিলো। তাই ২রা জুলাই অর্গানিক মার্ট নামক এক ফেসবুক
পেজের মধ্যামে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করি।অর্গানিক মার্টের উল্লেখযোগ্য
পণ্যের মধ্যে রয়েছে কাঠের ঘানিতে ভাঙানো সরিষার তেল, সুন্দরবনের খলিসা
ফুলের মধু,সুন্দরবনের গরান ফুলের মধু। মশলার মধ্যে রয়েছে হলুদ গুড়া, জিরা
গুড়া, মরিচ গুড়া, ধনিয়া গুড়া, পেঁয়াজ গুড়া, রসুন গুড়া ইত্যাদি।আরো রয়েছে কালোজিরা, মৌরি, আমলকী গুড়া, হরিতকি গুড়া, ত্রিফলা
গুড়া, শিমুল মুল গুড়া, চিরতা, অনন্ত মূল গুড়া, তালমূল গুড়াসহ রয়েছে বিভিন্ন
ধরনের ভেষজ পন্য।এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ।তেমনি ত্বক ও চুলের
যত্নেও আছে বিভিন্ন ধরনের ভেষজ উপাদান।
তিনি আরো বলেন, আমার প্রত্যেকটি পন্যের চাহিদা রয়েছে। প্রচুর অর্ডার আসছে।এমনকি খুলনার বাইরে থেকেও নিয়মিত অর্ডার পাচ্ছি।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে
তিনি জানান, ভবিষ্যতে ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি কিছু মানুষের
কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই।
অন্যদিকে ফার্মাসি ডিসিপ্লিনের
শিক্ষার্থী ফারহান সাদীর উদ্যোক্তা হবার গল্পটা একটা ভিন্ন ধরনের। তিনি
বলেন, ব্যাগ,ফেইরি লাইট, ক্যাপসুল ছাতা নিয়ে মাত্র ৪ হাজার টাকা বিনিয়োগ
করে অনেকটা শখের বশে অনলাইন ব্যবসায় শুরু করি। কিন্তু বর্তমানে এর চাহিদা
দেখে ব্যাবসায়ের পরিধি বৃদ্ধি করে স্থায়ী হবার স্বপ্ন দেখছি। প্রতিমাসে
প্রায় ১০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। যে আয়ের একটা অংশ খরচ হয় স্থানীয়
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কল্যানে।
এই উদ্যোক্তারা বিশ্বাস করেন
আত্মনির্ভরশীলতার জন্য উদ্যোক্তা হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। এরা সফল হলে আরো
অনেক তরুণ শিক্ষার্থী উদ্যোক্তা হবার স্বপ্ন দেখবে। যা বাংলাদেশের
প্রেক্ষাপটে চাকরির পেছনে ছুটে চলা লক্ষহীন তরুনদের কিছুটা হলেও স্বস্তি
দেবে।