উইকেটে যে কোনো জু জু ছিল না, তা লিটন দাসের ২২ রানের ছোট্ট ইনিংসেই
বোঝা গেছে। এমন উইকেটেও কিনা ১৪৮ রানের বেশি স্কোর বোর্ডে জমা করতে পারেনি
ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রতিপক্ষকে তাদের ঘরের মাঠে ৫০ ওভারের ম্যাচে মাত্র ১৪৯
টার্গেট দিয়ে বোলাররাই বা কতটা প্রতিরোধ গড়বেন! তবে ক্যারিবীয়দের জন্য
দুঃখের বিষয় হচ্ছে, তাদের ব্যাটসম্যানদের মতো বোলাররাও ব্যর্থ! ব্যাটে-বলে
ক্যারিশম্যাটিক পারফরম্যান্স দেখিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচেও ৭ উইকেটের সহজ জয় তুলে
নিয়েছে বাংলাদেশ।
ক্যারিবীয়দের নাস্তানাবুদ করে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করলেন
তামিমরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টানা তৃতীয় সিরিজ জয় বাংলাদেশের। গতকাল
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সফরকারীদের বিরুদ্ধে টানা সপ্তম জয়ের স্বাদও
পেলেন টাইগাররা।
টস জিতে ব্যাট করতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলীয় ১০ রানে প্রথম উইকেটের পতন।
৩৬ থেকে ৪১, এই ৫ রানের মধ্যে আরও ৪ উইকেট পতন। দলীয় ৪১ রানের মাথায় পঞ্চম
উইকেট এবং ৮৮ রানে ৮ উইকেট নেই ক্যারিবীয়দের। সেখান থেকে ৪১ রানের ইনিংস
খেলে দলের স্কোরকে ১৪৮-এ নিয়ে যান আট নম্বরে ব্যাট করতে নামা রোভমান
পাওয়েল।
এরপর লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের ১০০ বল আগেই জিতে যায় স্বাগতিকরা।
কাল স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ তার ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করে ম্যাচসেরা
হয়েছেন। ২৫ রানে ৪ উইকেট নেওয়া এ স্পিনার বলেন, ‘অনেক দিন পর ম্যাচসেরা
হয়ে খুবই ভালো লাগছে। প্রথম ম্যাচে আমি ভালো করতে পারিনি। তারপর সিনিয়র
ভাইদের সঙ্গে কথা বলেছি। সাফল্যও পেলাম এ ম্যাচে।’
এ ম্যাচে ফোকাস পয়েন্ট ছিল ‘অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান’কে দেখা এবং
মুস্তাফিজুর রহমানের ডেঞ্জার ডেলিভারি। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং
করেছেন। এ ম্যাচেও খারাপ করেননি সাকিব। ১০ ওভারে ৩০ রানে নিয়েছেন দুই
উইকেট। ব্যাট হাতে খেলেছেন হার না মানা ৪৩ রানের ইনিংস। বিশ্বসেরা
অলরাউন্ডারের ব্যাটিং পজিসন এক ধাপ নিচে নামলেও পারফরম্যান্সে কোনো ঘাটতি
নেই।
মুস্তাফিজুর রহমানের এক একটি ডেলিভারি ছিল দেখার মতো। দ্য ফিজ ৮ ওভার বোলিং করে ৩৯টি ডট, দুটি উইকেটও নিয়েছেন।
দারুণ এক হাফসেঞ্চুরি করেছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে রান করার চেয়েও
বাইশগজে বেশি সময় কাটানোর ব্যাপারেই মনোযোগী ছিলেন টাইগার ক্যাপ্টেন।
টাইগাররা সিরিজ জয়ের পাশাপাশি সুপার লিগের পয়েন্ট তালিকাতেও দেখিয়েছেন
ক্যারিশমা। টানা দুই জয়ে ২০ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তানকে টপকে তিনে বাংলাদেশ।
২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত এ তালিকার সেরা আটে থাকতে পারলেই পরের বিশ্বকাপ
নিশ্চিত হয়ে যাবে। বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খ্যাত এ সুপার লিগের জন্য এখন
প্রতিটি ম্যাচই মহাগুরুত্বপূর্ণ। সে কারণে সিরিজ নিশ্চিত হলেও পরের ম্যাচের
জন্য কঠোর প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নামবেন তামিমরা।
তবে শেষ ম্যাচে একাধিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলেন অধিনায়ক তামিম,
‘ড্রেসিংরুমের সবাই ক্ষুধার্ত। আমাদের ক্রিকেটাররা সবাই ভালো করার জন্য
মুখিয়ে রয়েছেন। তাসকিন আহমেদ ও সাইফুদ্দিন একাদশে জায়গা পাননি। তবে শেষ
ম্যাচে একাধিক পরিবর্তন আসতে পারে।’
এ ম্যাচটি মুশফিকুর রহিমের জন্য বিশেষ কিছু। গতকাল মাশরাফিকে টপকে
সর্বোচ্চ ওয়ানডে খেলার গৌরব অর্জন করেন। কালকের ম্যাচটি ছিল বাংলাদেশের
জার্সিতে মুশফিকের ২২০তম ওয়ানডে।