ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
অটো পাস নিয়ে সমালোচনার ঝড় সংসদে
Published : Monday, 25 January, 2021 at 12:00 AM
পরীা না নিয়ে অটো পাস দেওয়ার ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে জাতীয় সংসদে। এতে মেধাবীরা তিগ্রস্ত হবে, এটা দেশের জন্যও তিকর হবে বলে সংসদ সদস্যরা অভিযোগ করেন।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) পরীা ছাড়া এইচএসসি পরীার ফল প্রকাশের জন্য জাতীয় সংসদে ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১ পাসের প্রস্তাব করার পর, তা যাচাই বাছাইয়ের প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা এ সমালোচনা করেন। অবশ্য কেউ কেউ এ বিলের মাধ্যমে সরকার যে পদপে নিয়েছে, সে জন্য সরকারকে ধন্যবাদও জানান।
বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন, সারা বিশ্ব করোনার কারণে বিপর্যস্ত, বাংলাদেশের অবস্থা সবচেয়ে করুন। শিা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিা পর্যন্ত স্থবির। পরীা কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি করে পরীা নেওয়া হলে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার টেবিলে বসানো যেতো। আজ আইন পাস করে অটো পাস দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রাথমিক পর্যায় থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে।
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, সরকার দতার সঙ্গে করোনা মোকাবিলা করে যাচ্ছে। সব কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। সরকার একটু সচেষ্ট হলে পরীাও নেওয়া সম্ভব হতো। সরকার এখানে ব্যর্থ হয়েছে। সরকার অটো পাসের ঘোষণা দিয়ে শিার্থীদের সর্বনাশ করেছে।
জাতীয় পার্টির সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমরা অটো পাস না দিয়ে সংপ্তি পরীা নিতে পারতাম। ১৯৭১ এ একটা অটো পাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেটা নিয়ে একটা বদনাম ছিল। বলা হয় অটো পাস। তাই এ অটো পাস এড়ানো যেতো, যদি সরকার একটা সংপ্তি পরীার ব্যবস্থা করতো।
জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, আগে জীবন, তারপর সব কিছু। অনেকে বলে শিা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, অটো পাসে মেধার সংকট হবে। জীবন আগে, সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এর জন্য ধন্যবাদ। সব শিা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, কিন্তু কওমি মাদরাসা খোলা কেন?
বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, দেশের শিা ব্যবস্থার নানা দুর্ভোগের মধ্যে এখন যুক্ত হচ্ছে অটো পাস। এইচএসসিতে নির্ধারিত হয়, কে ডাক্তার হবে, কে ইঞ্জিনিয়ার হবে। অতীতের ফলাফরের ওপর ভিত্তি করে মেধার ইনসাফ হয় না। এ আইন পাসে সবচেয়ে বেশি তি হবে মেধাবী শিার্থীদের। এটা শুধু তাদের নিজের নয়, দেশেরও তি। মুখে বলা হলেও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। তাহলে শিা প্রতিষ্ঠান কেন খুলে দেওয়া হচ্ছে না?
বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্যের পর শিামন্ত্রী ডা. দীপু মণি বলেন, পরীা নেওয়া সম্ভব হয়নি, কিন্তু শিার্থীরা পরীার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল। পরীার আগে করোনার সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় ঠিক তখনই পরীা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এটা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে একই অবস্থা। পরীা বন্ধ রাখতে হয়েছে। কোনো চিন্তা-ভাবনা ছাড়া হঠাৎ করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটা ভাবার সুযোগ নেই। সব কিছুর ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিার্থীরা সংক্রমিত হওয়া থেকে রা পেয়েছে এবং তাদের দ্বারা অভিভাবকদের সংক্রমিত হওয়াও আমরা ঠেকাতে পেরেছি। একজন শিার্থী হঠাৎ করে এইচএসসিতে এসে ভালো ফলাফল করে না। পূর্বের ধারাবাহিকতা থাকে। পূর্বে দু’টি পরীা জেএসসি এবং এসএসসির ফলাফলের গড় করে এইচএসসির ফলাফল তৈরি করা হয়েছে। এখন বিলটি পাস হলে তা প্রকাশ করা যাবে। দুই-তিনদিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে। সরকারের ব্যাপক পদেেপর ফলে করোনা সংক্রমণ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। পরীা দিতে গেলে এ সংক্রমণ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তো।
কওমি মাদরাসা খোলা রাখা প্রসঙ্গে শিামন্ত্রী বলেন, কওমি মাদরাসায় যারা লেখাপড়া করে, তাদের অধিকাংশ এতিম, দুস্থ। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবাসিক ব্যবস্থা আছে। তারা যদি সেখানে থাকতে না পারে, আরও সমস্যা হবে। এ বিবেচনায় কওমি মাদরাসা খুলে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়।