কাউকে
জোর করে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ
মালেক। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন স্বাধীনভাবে যে নিতে চায় তাকেই দেওয়া হবে। তিনি
বলেন, আমরা কুর্মিটোলা হসপিটালে যেসব নার্সকে দিচ্ছি তারা নিজেরা নিতে
চাচ্ছেন। আমরা আগে ফ্রন্ট লাইনারকে ভ্যাকসিন দেব, ডব্লিইউএইচওর গাইডলাইন
অনুযায়ী। পর্যায়ক্রমে যাদের ভ্যাকসিন লাগবে তাদের সবাইকে ভ্যাকসিন দেব।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি
বলেন, ভ্যাকসিনের বিষয়ে অনেক কথাবার্তা আসে, আমরা জানি। আমাদের কাছে যে
ভ্যাকসিন আছে, সেটা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি আবিষ্কার করেছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানি এই ভ্যাকসিনের মালিক, ভারতে শুধু এটার উৎপাদন
হচ্ছে। তাদের উৎপাদন করার বড় একটি সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন দেশে এই
ভ্যাকসিনটি ওখান (ভারত) থেকে পাঠানো হচ্ছে।
অনেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার
কথা বলছেন জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, প্রত্যেকটি ভ্যাকসিনের কিছু
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। ওষুধেরও থাকে। অনেক ওষুধ আছে অনেকের স্যুট করে
না, এলার্জি হয়। এই ওষুধের যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে না এটা আমরা বলতে
পারি না। তবে যতুটুকু শুনেছি, এই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব সামান্য।
একটু মাথাব্যথা হয় বা জ্বর হয়।
ভ্যাকসিন নিয়ে অনেকের মধ্যে আস্থাহীনতা
আছে, আস্থা তৈরিতে আপনারা কী পদপে নেবেন— এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন,
যত ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়েছে, এর মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই সবচেয়ে কম। সেই দিক বিবেচনায় আমরা মনে করি এটা নিরাপদ।
সায়েন্টিফিক ফর্মুলাও বেশ নিরাপদ। যেখানে প্রয়োগ করা হয়েছে সেখান থেকেও
আমরা খবর পেয়েছি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব কম হয়েছে। ভালো আছে লোকজন। আমাদের
জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই আপনারা ভ্যাকসিন নেবেন। করোনা ভাইরাসের এই যুদ্ধে
ইনশাআল্লাহ আমারা জয়লাভ করব। পার্শ্ববর্তী অনেক দেশ এখনও ভ্যাকসিন আনতে
পারেনি। বলতে পারেন আমরা প্রথম ভ্যাকসিন এনেছি।
টিকা দেওয়া প্রথম ২৭
জনের মধ্যে কোনো ভিআইপি বা রাজনীতিবিদ থাকছেন কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী
বলেন, যাদের টিকা দেওয়া হবে তাদের বেশিরভাগই স্বাস্থ্যকর্মী। বাইরের
দুই-একজনও থাকতে পারেন। স্বাস্থ্যকর্মীদেরও জোর করে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে
না। ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের প্রথমে টিকা দেওয়া হবে। অনেকেই ভ্যাকসিন
চাচ্ছেন, অনেক সিনিয়র ব্যক্তি যাদের আপনারা নাম জানার ও শোনার চেষ্টা করছেন
তাদের অনেকেই চাচ্ছেন। আমরা তাদের দিচ্ছি। এরপর আমরা সবাই নেব, আমরাও নেব।
বিদেশি
গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে ট্রায়ালের জন্য ভারত এই টিকা পাঠিয়েছে— এমন
প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অনেকে অনেক কথা বলতে পারে। ভারত ও
লন্ডনে বহু লোককে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, তাই ট্রায়াল করার আর প্রশ্ন
জাগে না। ৩ কোটি ভ্যাকসিন ট্রায়ালের জন্য প্রয়োজন হয় না। আমরা এটা
(ভ্যাকসিন) লোককে দেওয়ার জন্য জেনেশুনেই এনেছি।
ভ্যাকসিনের জন্য আমাদের
অর্থের প্রয়োজন হবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আনন্দের বিষয় হলো
বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা প্রত্যেকেই আবার প্রস্তাব দিয়েছে ভ্যাকসিন কেনার
জন্য তারা অর্থায়ন করতে চায়। সেটা প্রায় ১.৮ বিলিয়ন ডলার। এই অর্থ তারা
আমাদের অফার করেছে। এখন বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত তারা কতটুকু গ্রহণ করবে
বা করবে না। বাংলাদেশের প্রতি তাদের অনেক আস্থা, সেই আস্থার ফলই আমরা এসব
প্রস্তাবের মাধ্যমে পাচ্ছি।