*গাড়ির গতি কমে অর্ধেক . বাড়ছে দুর্ঘটনার শঙ্কা
*ফগলাইট-ব্যাকলাইট জ্বালিয়ে রাখার পরামর্শ
মাঘের
শুরু থেকে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। শীত বাড়ার সাথে সাথে বেড়েছে ঘন কুয়াশা।
সন্ধ্যার পর থেকে কুয়াশা যেন চারদিক ঘিরে ফেলছে। রাত বাড়ার সাথে সাথে ঘন
কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় মাঠ-ঘাট, সড়ক-মহাসড়কসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। আর এমন
তীব্র কুয়াশায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যাত্রীবাহী, মালবাহী
সব যানবাহন।
গত দুই দিন ধরে ঘন কুয়াশার কারণে ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম
মহাসড়কে স্থবির হয়ে পড়েছে যান চলাচল। শুক্রবার রাত ১১টার পর থেকে হঠাৎ করে
বেড়েছে কুয়াশার মাত্রা। ঘন কুয়াশায় ঝাপসা হয়ে গেছে মহাসড়কের চারপাশ। ফলে
সব ধরনের যান চলাচল ব্যহত হয়েছে। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে দুর্ঘটনার শঙ্কা।
শনিবার
(২৩ জানুয়ারি) সকাল ১১টা পর্যন্ত কুমিল্লা অংশে সূর্য্যরে দেখা মেলেনি।
রাত গড়িয়ে সকাল হলেও ঘন কুয়াশায় বোঝার উপায় ছিল না দিন আর রাতের পার্থক্য।
বিশেষ
করে মহাসড়কের যেসব এলাকায় গাছপালা নেই বা আশপাশে বাড়িঘর নেই, সেইসব নির্জন
জায়গাগুলোতে কুয়াশার তীব্রতা বেশি। এছাড়াও মহাসড়কের পাশে বড় জলাশয়গুলো ঘন
কুয়াশায় অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে। সেইসব এলাকাগুলোতে মহাসড়কে ফগলাইটও কাজে
আসছে না।
চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা পণ্যবাহী ট্রাকচালক মিজানুর রহমান
বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মালামাল নিয়ে ঢাকায়
রওয়ানা হওয়ার পর থেকে রাত বাড়ার সাথে সাথে কুয়াশাও বাড়তে থাকে। রাত সাড়ে
১২টায় কোনো রকমে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার এলাকায় পৌঁছে গাড়ি সাইড করে থামিয়ে
ঘুম দিই। সকালে উঠেও দেখি, কিছু দেখা যায় না। হেডলাইট জ্বালিয়ে সকাল ৮টায়
পদুয়ার বাজার থেকে রওয়ানা করি। এখন সোয়া ৯টা বাজে, মাত্র ২৫ কিলোমিটার
চালায়ে চান্দিনায় আসছি।’
কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহনের
চালক মোস্তফা বলেন, ‘রাত ১২টায় কক্সবাজার থেকে রওয়ানা করেছি। অন্যান্য সময়
কুমিল্লা আসতে ৬ ঘন্টা লাগে। আজ ১০ ঘন্টা পর কুমিল্লা পৌঁছেছি। যেখানে
৮০-৯০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালিয়ে আসতাম, এখন ৪০ কিলোমিটার গতিতে চালাতেও
কষ্ট হচ্ছে। এমন কুয়াশা, ফগলাইটে ১০-১৫ হাত সামনেও কিছু দেখা যায় না।
হাইওয়ে
পুলিশ ইলিয়টগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) সালেহ্ আহমেদ বলেন, ফাঁকা
জায়গাগুলোতে কুয়াশার তীব্রতা বেশি দেখা যাচ্ছে। চালকরা তখন সড়কের পাশে সাদা
দাগ বুঝে উঠতে পারে না। অনেক সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, কখনও রোড ডিভাইডারের
সাথে ধাক্কা লাগছে; আবার কখনও গাড়ি খাদে পড়ে যায়। তবে এখন পর্যন্ত এ এলাকায়
বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। আমরা প্রতিটি গাড়িচালককে ফগলাইট ব্যবহারের
পরামর্শ দিচ্ছি।’
হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
মোল্লা মোহাম্মদ শাহিন কুমিল্লার কাগজকে বলেন, তীব্র কুয়াশায় দুর্ঘটনা রোধে
নিজেও সামনে দেখার জন্য যেমন ফগলাইট ব্যবহার জরুরি, তেমনি অন্য চালকদের
আপনার গাড়ি দেখার সুবিধার্থে ব্যাকলাইট জ্বালিয়ে রাখাও গুরত্বপূর্ণ। এসব
নিশ্চিত করতে আমাদের হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে।’