ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
খোয়াই নদীর চরে চাষাবাদ
Published : Monday, 25 January, 2021 at 1:54 PM
খোয়াই নদীর চরে চাষাবাদ খরস্রোতা খোয়াই নদী, আবার কখনো স্রোতবিহীন নদী। নদীর মাঝখানে পানি, আবার দুইদিক কিনারে বেশ উঁচু উঁচু খালি চর রয়েছে। এই চরে চাষ হচ্ছে নানা ধরনের শাক সবজি ও আখ। খোয়াই নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় প্রবেশ করে শায়েস্তাগঞ্জ হয়ে কালনী নামক স্থান দিয়ে মিলিত হয়েছে মেঘনা নদীতে ।
শুকনো মৌসুমে খোয়াই নদীর দুই পাশে বড় বড় চর জেগে ওঠে। এ চরের বুকে হাজার হাজার কৃষক তাদের স্বপ্নের ফসল চাষাবাদ করেন। যার মধ্যে রয়েছে আখ, সরিষা, গম, টমেটো, বেগুন, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও আলুসহ বিভিন্ন ফসল। ফসলে ভরে যায় নদীর দুই দিকের চরগুলো। একদিকে পানি অন্যদিকে সবজির বাগান দেখে যেন চোখ মিলিয়ে যায়। কৃষিবিভাগের মতে, নদীর দুই পাড়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার কৃষক ফসল চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহের পথ তৈরি করেছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার উবাহাটা, লেঞ্জাপাড়া, পুরানবাজার, আলাপুর, কালিগঞ্জ, চরহামুয়া, দক্ষিণ চরহামুয়া, কলিমনগর এলাকায় খোয়াই নদীর তীরে আখ, সীম, টমেটো, করলা, বেগুন, বরবটি, লাউ, কুমড়া, বাঁধাকপি, ফুলকপিসহ আরও অনেক সবজি চাষ করা হচ্ছে।
এসব সবজি চাষাবাদ করে কৃষকরা লাভের মুখ দেখছেন। বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। চরের পাশেই নদীর পানি থাকায় এসব শাকসবজি চাষ করতে পানির জন্য বেগ পেতে হয় না। আগে যারা আখ চাষে উৎসাহী ছিলেন তারা অনেকেই এখন শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত রয়েছেন। বাল্লা থেকে হবিগঞ্জ পর্যন্ত খোয়াই নদীর দুই পাড়ে বিভিন্ন সবজি ও গাছের বাগান গড়ে তুলেছেন নানা পেশার মানুষ। চরে সবজি চাষ ছাড়াও নদীতে পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। আলাপুর গ্রামের আল আমিন মিয়া জানান খোয়াই নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করেছেন। এর মধ্যে মুলা আর মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছেন। করোনায় আগে তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। করোনায় সময় চাকরি চলে গেছে। এরপরে তার বাড়ির পাশে খোয়াই নদীর চরে সবজি চাষ শুরু করেন। প্রথমবারেই সফলতা আসে মুলা চাষ করে। প্রায় ২৫ হাজার টাকা মুলা বিক্রি করেছেন। এবার চাষ করেছেন মিষ্টি কুমড়ার। মিষ্টি কুমড়ারও বাম্পার ফলন হয়েছে। সাবাসপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম নদীর চরে ফুলকপি আর বাঁধাকপির চাষ করে লাখ টাকা আয় করছেন। এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সুকান্ত ধর বলেন এ বছর সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। করোনার কারণে মানুষ সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আর বাজারেও ভালো দাম পাচ্ছে কৃষক। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকদের বিভিন্ন প্রণোদনা দিচ্ছেন। এর কারণে আরো মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে সবজি চাষ করার জন্য আমরা সাবির্ক সহযোগীতা করছি। অনেককেই পরার্মশ দিয়েছি। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী চাষাবাদ করলে যে কেউ সফল হবেন।