‘তাদের মুখে হাসি, চোখে স্বপ্ন’ ‘স্বপ্নের ঠিকানা’য় যাচ্ছেন ১০৬টি গৃহহীন পরিবার
Published : Tuesday, 26 January, 2021 at 12:00 AM
শাহীন আলম, দেবিদ্বার ||
কুমিল্লার দেবিদ্বারে গৃহহীন-ভূমিহীন ১০৬টি পরিবার যাচ্ছে তাদের ‘স্বপ্নের ঠিকানায়’। প্রথম দফায় ৩৫টি পরিবারকে ঘরের চাবি, জমির দলিলসহ অন্যান্য কাগজপত্র তুলে দেয়া হয়েছে।
দেবিদ্বারে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় বুড়িপাড় ১২টি ও কাচিসাইর এলাকায় ২৩টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্যদিকে সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের নিজস্ব অর্থায়নে ২১টি ঘর বিতরণের প্রক্রিয়া চলছে। যা খুব শিগ্রই বিতরণ করা হবে বলে জানা গেছে।
উপজেলা ইউএনও অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মোট ১০৬টি ঘর বিতরণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টি ঘরের কাজ সম্পন্ন হওয়ায় বিতরণ করা হয়েছে, বাকি ৭১টি ঘর নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, ২শতাংশ জমির উপর নির্মাণ করা প্রতিটা ঘর নির্মাণে ব্যয় হবে ১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা। প্রতিটি ঘরে দুুটি কক্ষ, যেখানে পর্যাপ্ত আলো বাতাসসহ থাকছে বিনামূল্যে বিদ্যুতের ব্যবস্থা। সূত্রে আরও জানা গেছে, যারা সরকারি ঘর পেয়েছে তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রকল্পের পাশ^বর্তী সরকারি পুকুরে মাছ চাষসহ প্রতিটি পরিবারকে স্বাবলম্বী করার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষনের উদ্যোগে নিবে উপজেলা প্রশাসন।
প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে আনন্দিত বুড়িপাড়ের রাজিয়া বেগম। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, নিজের বেশির ভাগ সময় কেটেছে অন্যের জায়গায়, অন্যের ভিটে। একটি ঘরের স্বপ্ন ছিলো বহু দিনের কিন্তু এখন জমিসহ পাকা ঘর পাবো এটা কখনো ভাবেনি! এ কথা বলেই আনন্দে কেঁদে ফেলেন রাজিয়া। তিনি আরও বলেন, আমার এক ছেলে রয়েছে, এতোদিন লেখা-পড়া করার মতো কোন জায়গা ছিলো না, এখন থেকে নিজের ঘরে বসে পড়ালেখা করতে পারবে। মাথা গুঁজার ঠাঁই হয়েছে ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাবো, ছেলেকে নিয়ে নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছি।
নতুন ঘর পেয়ে বেশ খুশি মমতাজ বেগমও। তিনি বলেন, এতোদিন স্বামী সন্তানদের নিয়ে জরার্জিন-খুপরি ঘরে থাকতাম। আজকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার নতুন ঘর পেয়েছি। ঘর পেয়ে আনন্দিত বুড়ির পাড় গ্রামের আবুল হোসেন। তিনি বলেন, আজ থেকে আমার পরিবার নিয়ে স্বপ্নের ঘরে থাকব। এটা ভেবেই আনন্দে আত্মহারা আমি।
এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্নই দেখিয়েছিলেন, যে বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। বঙ্গবন্ধুর কন্যা সে স্বপ্ন পূরণ করেছেন। এভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
ইউএনও রাকিব হাসান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি স্বপ্ন ছিলো এদেশে কেউ না খেয়ে থাকবে না, আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ং সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি স্বপ্ন এদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না, সে স্বপ্নও আজ বাস্তবায়িত হয়েছে। আমরা প্রথম পর্যায়ে ৩৫টি গৃহহীন পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর বিতরণ করেছি। আরও ৫০টি ঘর নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ব্যক্তিগত উদ্যোগে আরও ২১টি ঘর বিতরণ করবেন।