লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুতে নতুন করে কঠোর লকডাউন জারি করা হয়েছে।
দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের বিস্তার রোধ করতে মঙ্গলবার রাত থেকেই লকডাউন
কার্যকর হয়েছে। এদিকে গবেষকরা জানিয়েছেন, চীনের সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের তৃতীয়
ধাপের ট্রায়াল চালিয়ে যাওয়া হবে। সম্প্রতি এক স্বেচ্ছাসেবী ওই ভ্যাকসিনের
প্লেসবো গ্রহণের পর তার মৃত্যু হয়েছে।
রাজধানী লিমা এবং নতুন করে করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেছে এমন আরও নয়টি এলাকায়
পুরোপুরি লকডাউন জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সিসকো সাগাস্তি। তিনি
জানিয়েছেন, সংক্রমণ বাড়তে থাকার কারণে বাড়তি রোগীর চাপে হাসপাতালগুলোতে
ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে।
ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখ পর্যন্ত কড়াকাড়ি কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার পেরুতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে আরও ৪ হাজার ৪৪৪ জন। ফলে দেশটিতে
এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১১ লাখ ৭ হাজার ২৩৯। আগামী মাস থেকে
ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু করার পরিকল্পনা করছে সরকার। দেশের জনগণকে
ভ্যাকসিনের আওতায় আনা গেলে এই সংকট থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজে পাওয়া যাবে বলে
আশা করা হচ্ছে। পেরুতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৪০ হাজার ১০৭ জনের
মৃত্যু হয়েছে।
কায়েতানো হেরেদিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সিনোফার্মের
ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করছে। যারা ভ্যাকসিন অথবা এর প্লেসবো ব্যবহার করেছেন
তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভ্যাকসিন
গ্রহণের কারণে কোনো স্বেচ্ছাসেবীর মৃত্যু হয়নি। এ বিষয়টি পরিষ্কার করা
জরুরি। কারণ ওই স্বেচ্ছাসেবী ভ্যাকসিন নয় বরং প্লেসবো গ্রহণ করেছিলেন। এ
বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সব তথ্য পাঠানো হবে এবং তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল
চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
কায়েতানো হেরেদিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গবেষক জার্মান মালাগা
রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ওই স্বেচ্ছাসেবী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন। মালাগা
জানিয়েছেন, যে ১২ হাজার স্বেচ্ছাসেবী ভ্যাকসিন বা প্লেসবো নিয়েছেন তাদের
দু'টি করে ডোজ দেয়া হয়েছে। তাদের শরীরে এর প্রতিক্রিয়া কেমন হচ্ছে তা নিয়ে
কাজ করছেন গবেষকরা।
তিনি বলেন, আমরা প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবীকেই বলছি তাদের নিজেদের যত্ন
নিতে। কারণ আমরা জানি না যে তাদের ভ্যাকসিন নাকি প্লেসবো দেয়া হয়েছে।
লকডাউনের আওতায় সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় দোকান-পাট বন্ধ রাখা হয়েছে। লোকজনকে
বাড়ি থেকে কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক স্থল ও বিমান
ভ্রমণ বন্ধ রাখা হয়েছে।
১ কোটি ৪০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন কিনতে ইতোমধ্যেই অ্যাস্ট্রেজেনেকার সঙ্গেও
চুক্তি করেছে পেরু। এক স্বেচ্ছাসেবীর দেহে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাওয়ায়
গত মাসে সিনোফার্মের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।